আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল— তাহলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা) কেন অযোগ্য ঘোষিত হবে, এমন প্রশ্ন তুলেছেন দলটির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
বুধবার (১৩ আগস্ট) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে (ইসি) লিখিতভাবে আবেদন করে জাপাকে আগামী নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার দাবি জানায়।
সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল— চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে বুধবার জানিয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টি যেন নির্বাচন অযোগ্য ঘোষণা করা হয় এবং নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, এ বিষয়ে তারা ইসিতে লিখিত দিয়েছে। ঐক্যমত্য কমিশনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোও জাপাকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার বিষয়ে লিখিত দিয়েছে। এ বিষয়ে আপনাদের বক্তব্য কি?
উত্তরে শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার জন্য যেসব কন্ডিশন আছে নির্বাচন ও গণ প্রতিনিধিত্ব আইনে (আরপিও) তার কোনোটিতেই জাতীয় পার্টি পড়ে না। তাহলে জাতীয় পার্টিকে কেন নির্বাচনে মানে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে? আর নির্বাচন মানেই তো সকল দলের অংশগ্রহণ, বহুমত, বহু দল। জাতীয় পার্টিকে নিয়ে যে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলা হচ্ছে, আমি এটা খুব দুঃখজনক মনে করি। যারা এই দাবিটি তুলছে, তারা এই দাবি প্রত্যাহার করবে, দেশের স্বার্থে জাতীয় পার্টির সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে আমরা দেশ গঠন করবো।
আপনারা আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট হিসেবে কাজ করেছিলেন, রাতের ভোট দিনের ভোট সন্ধ্যার ভোট— সব নির্বাচনেই অংশ নিয়েছিলেন, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জাপা মহাসচিব বলেন, ওই ভোটগুলোয় চরমোনাই অংশগ্রহণ করেছিল। ২০২৮ সালে বিএনপি, জামায়াত অংশগ্রহণ করেছিল। এ সময়ের মধ্যে যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো হয়েছিল, বাংলাদেশের অসংখ্য লোকাল গভর্নমেন্টে জামায়াতের নেতারা নির্বাচিত হয়েছিল। বিগত আমলে যারা নির্বাচিত হয়েছিল, তারা এখনও আছে। তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন করেছিল কিন্তু ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি; ফলে আমি মনে করি অবশ্যই আমাদেরকে দোষ দেওয়ার কিছু নেই।
তিনি বলেন, আমরা ভোটে অংশগ্রহণ করেছি। অন্যরাও করেছে। শুধুমাত্র ভোটে অংশগ্রহণের জন্য কাউকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা যেতে পারে না। এটা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকারক। এটা দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের জন্য ক্ষতিকারক। আর সব দল যদি ব্যান হয়ে যায় তাহলে ভোটে কম্পিটিটিভনেস থাকবে না। কম্পিটিটিভনেস ছাড়া যদি একটি ভোট হয় এবং একটি সরকার হয় সেই সরকার টেকসই হবে না। অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। পলিটিক্যাল হ্যাসল বাড়বে, দেশ ধীরে ধীরে গৃহযুদ্ধের দিকে চলে যাবে।
ইইউডি/এমজে