ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১০ সফর ১৪৪৭

রাজনীতি

আবারও সংগ্রামের সময় এসেছে: সেলিমা রহমান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:৩৯, আগস্ট ৪, ২০২৫
আবারও সংগ্রামের সময় এসেছে: সেলিমা রহমান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, আগামীকাল মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জুলাই সনদ ঘোষণার পরেই আমাদের অবস্থান স্পষ্ট হবে। তবে এটুকু স্পষ্ট করে বলতে চাই আবারো সংগ্রামের সময় এসেছে।

যদি দেশের জনগণের দাবি অনুযায়ী একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করা হয়, তাহলে বাংলাদেশের জনগণ আবারো ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রামে নামবে।  

তিনি আরও বলেন, সত্যি কথা বলতে, প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তি দুটোই আমাদের আলোচনা হয়ে গেছে। আমরা রাষ্ট্র গঠন করি কেন? রাষ্ট্রের কাছে আমরা কি চাই? আমরা সুশাসন চাই, রাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার চাই, অর্থনৈতিক অধিকার চাই, সবচেয়ে বড় কথা, মৌলিক অধিকার এবং বেঁচে থাকার অধিকার চাই।

সোমবার (৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে গণফোরামের আয়োজিত ‘ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থান :প্রত্যয় ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বেগম সেলিমা রহমান বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটি সুন্দর দেশ, স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। কিন্তু সেই বাংলাদেশে আজকে ৫৪ বছর হলো। সেই বাংলাদেশের স্বাধীনতায় আমরা দেখেছি, যতবার আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা অগ্রসর হচ্ছি, ততবারই আমাদের কিছু না কিছু বাঁধা এসে আমাদেরকে বিব্রত করছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের জাতি এতই সংগ্রামী যে কোনো বাধাই আমাদের থামাতে পারেনি। প্রতিবারই আমরা গণতন্ত্রের পথে একধাপ এগিয়েছি। সর্বশেষ ১৬ বছরব্যাপী আন্দোলনের ফসল হলো এই জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান।

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একটা চরম দানবের সরকারের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছি, যারা মানুষের পেটে লাথি মেরে উন্নয়নের কথা বলে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পুঁজি করে দেশ চালাতে চেয়েছে। সেই দানবীয় সরকারের পতন ঘটেছে গণঅভ্যুত্থানে।

অভ্যুত্থানের চরিত্র ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চলার পর সমগ্র জাতি রাজপথে নেমে এসেছিল। ছাত্র, জনতা, শ্রমিক, নারী, পুরুষ, শিশুরাও। দেশজুড়ে এক অনির্ধারিত যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল।

তিনি অভিযোগ করেন, আজ এক বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু সেই গণ-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন কোথাও দেখা যাচ্ছে না। আজকের অবস্থা হলো, যারা একসময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিক্রি করে স্বৈরাচার চালিয়েছিল, তারাই আবার এখন গণঅভ্যুত্থানের নামে ক্ষমতায় আসীন হতে চায়।

বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে বেগম সেলিমা রহমান বলেন, নানান রকম তত্ত্ব, পরামর্শ—এসব আমাদের দেশে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের চাওয়া একটাই—গণতন্ত্র, জনগণের সরকার।

ড. ইউনূস সম্পর্কে তিনি বলেন, ডক্টর ইউনূসকে আমরা এনেছিলাম। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হয়েছেন নিরপেক্ষতা রক্ষা করতে। তিনি নিজেই একটি নতুন দল গঠনের চিন্তা করেছেন। এর ফলে দল-মত নির্বিশেষে দেশের জনগণ আজ বিক্ষুব্ধ।

তিনি বলেন, আগামীকাল জুলাই সনদ ঘোষণার পরেই আমাদের অবস্থান স্পষ্ট হবে। তবে এটুকু স্পষ্ট করে বলতে চাই—আবারো সংগ্রামের সময় এসেছে।

বক্তব্যের শেষে বেগম সেলিমা রহমান বলেন,  ড. ইউনূসকে আপনি অবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। সম্মানের সঙ্গে দেশ ছাড়ুন। তা না হলে বাংলাদেশের জনগণ জানে কীভাবে স্বপ্ন বাস্তব করতে হয়।  

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের  ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রহিন হোসেন প্রিন্স, জেএসডির সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রবসহ আরও অনেকে।

ডিএইচবি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।