ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৫ সফর ১৪৪৭

রাজনীতি

আমরা এমন জাতি নিজেদের সন্তানদেরও পুড়িয়ে মারি: মির্জা ফখরুল

অতিথি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৪৮, জুলাই ৩০, ২০২৫
আমরা এমন জাতি নিজেদের সন্তানদেরও পুড়িয়ে মারি: মির্জা ফখরুল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ফাইল ছবি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাভারে ছাত্র-জনতাকে তৎকালীন পুলিশের পুড়িয়ে মারার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা এমন একটা জাতি, আমরা আমাদের নিজেদের সন্তানদেরও পুড়িয়ে মারি।  

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল ৪ টার দিকে সাভারের আশুলিয়ার শ্রীপুর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন দারুল ইহসান মাদরাসা মাঠে ঢাকা জেলা বিএনপি আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমার নিজেকে ধিক্কার দিতে ইচ্ছে করে, আমরা এমন একটা জাতি, আমরা আমাদের নিজেদের ছেলেদের পুড়িয়ে মারি। আমরা এমন একটা জাতি যে রাষ্ট্রের কর্মচারী-কর্মকর্তারা আমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করে, এমনকি পুড়িয়ে হত্যা করে।  

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ এবং আহতদের সরকারের সহায়তা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যাদের পুড়িয়ে মারা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন বেঁচে ছিলেন। সেই ঘটনায় তাদেরকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এক শহীদের পরিবার অভিযোগ করেছেন, তার স্বামীকে পুড়িয়ে মারার পরে তাকে কেউ খোঁজ নেয় নি, তাকে কেউ সহযোগিতা করে নাই।  

মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি ঢাকার ডিসিকে এখানে বসেই ফোন করেছিলেন। সরকার অঙ্গীকার করেছিল আহত এবং শহীদের পরিবারগুলোকে প্রাথমিকভাবে ১০ লাখ টাকা করে অনুদান দিবেন, আর যারা আহত হয়েছিলেন তাদের চিকিৎসার সব ব্যয় বহন করবেন। এখানে মাত্র ২ জনকে পেয়েছি যারা সেই টাকাটা পেয়েছেন।

শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা এমন একটা জাতি, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আমাদের নেতারা, আমাদের নেতৃত্ববলে যাদেরকে দেশের মানুষ নেতা বলে মনে করে; তারা ক্ষমতায় চিরদিন টিকে থাকার জন্য গুলি করে মানুষকে হত্যা করে; যা হাসিনা করেছে।  

হাসিনা এবং তার দোসরদের বিচার কিন্তু এখনো দৃশ্যমান হয়নি মন্তব্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, তীব্রস্বরে দাবি এসেছে যে আমরা হাসিনার বিচার চাই, গোটা জাতি হাসিনার বিচার চায়। হাসিনা পালিয়ে গেছে ভারতে। ভারত তাকে আশ্রয় দিয়েছে। সেখান থেকে তিনি বিভিন্ন অভিও ভার্সনে, কথায়, ভিডিওতে বাংলাদেশে আবারও নৈরাজ্য সৃষ্টি করার জন্য বিভিন্ন রকম উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। চেষ্টাও করেছে, গোপালগঞ্জে তারা সেই অবস্থার সৃষ্টি করেছে।  

নিজের জাতি, নিজের দেশকে রক্ষার জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

অন্যদলগুলোর সঙ্গে মতবিরোধ নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে অনেক কথা হচ্ছে, রাজনৈতিক বাদানুবাদ হচ্ছে। এটা হবেই গণতন্ত্রে সেটা স্বাভাবিক। এমন কোনো কিছু করবেন না যাতে আবার গণতন্ত্র ব্যাহত হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমাদের সেটাই আহ্বান থাকবে।

তিনি বলেন, ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে এমন অবস্থা তৈরি করবেন না, যাতে আবার ফ্যাসিস্ট হাসিনা সুযোগ পায় দেশে ফিরে আসার। আমরা অনুরোধ করবো সব রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে যে আসুন আমাদের যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো মিটিয়ে ফেলে আমরা একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাই। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করি।  

বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে দলটির মহাসচিব বলেন, আজকে দেশকে আবার সঠিক জায়গায় নিয়ে আসার জন্য আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে একটা ভিশন ২০-৩০ দিয়েছিলেন রাষ্ট্রটাকে বদলানোর জন্য। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০২২ সালে ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন এই রাষ্ট্রটাকে বদলানোর জন্য, কাঠামো বদলানোর জন্য এবং বিভিন্ন সংস্কারের জন্য।  

এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা জেলা ও স্থানীয় বিএনপি নেতারা।

এমইউএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

রাজনীতি এর সর্বশেষ