ঢাকা: ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির ঐক্য অপরিহার্য উল্লেখ করে বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল বলেছেন, এই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্র চলছে। এই ঐক্যে কোনো বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না।
শনিবার (১২ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁওয়ের এফডিসিতে জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়নে নাগরিক সচেতনতা বিষয়ে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ অয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
ডা. মওদুদ হোসেন বলেন, গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ গুম-খুনসহ যেসব অপকর্ম করেছে সেজন্য তাদের প্রতি ঘৃণাই যথেষ্ট নয় বরং যথাযথ বিচার অপরিহার্য। জীবন-মৃত্যুর অদ্ভুত সমীকরণে উপনীত হয় গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তি ও তার পরিবার। গুমের শিকার পরিবার ঈদ, পূজা-পার্বণ, উৎসব পালন করতে পারে না, তাদের পরিবারের প্রতীক্ষার দিন শেষ হয় না। গুম পৃথিবীর জঘন্যতম অপরাধ।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মারণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে শেখ হাসিনা ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছেন বলেও উল্লেখ করেন ডা. মওদুদ হোসেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে যদি কেউ পুনর্বাসন করতে চায় তাহলে সেটি হবে অপরাধীর পক্ষে অবস্থান নেওয়া। ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তির ঐক্য অপরিহার্য। বর্তমানে এই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্র চলছে। এই ঐক্যে কোনো বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না।
বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক বলেন, একটি বিশেষ দলকে টার্গেট করে নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। সন্ত্রাসী যেই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় আনতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই আন্দোলনের প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ড শেখ হাসিনার নির্দেশে হয়েছে। শেখ হাসিনা যে জুলাই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা তা এখন সারাবিশ্বের মানুষের মুখে মুখে। শেখ হাসিনা ছিল একজন নিষ্ঠুর, নির্দয়, কুৎসিত, অমানবিক ও অত্যাচারী স্বৈরশাসক। শেখ হাসিনা ছিল সারাবিশ্বের ফ্যাসিস্টের মুখপাত্র। তিনি দেশটাকে বাপের তালুক মনে করতেন। নমরুদ-ফেরাউনের অত্যাচারকেও হার মানিয়েছিল শেখ হাসিনার জুলুম অত্যাচার। মিথ্যা বলতে বলতে মিথ্যাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার মাস্টার ছিলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায়ে দণ্ডিত হলে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের বহু নেতাই নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারাবেন। তাই আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাতীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে।
চৌধুরী কিরণ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর জুলাই আমাদের ইতিহাসের এক যুগান্তকারী দলিল, জুলাই আমাদের ঐক্যের প্রতীক। জুলাই আমাদের তারুণ্যের অহংকার, বিদ্রোহের অগ্নিশিখা। জুলাইয়ের চেতনা বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণ ছিল অভূতপূর্ব। এ বিজয় হাসিনাবিরোধী সব শক্তির। মানুষের মনে একটা সন্দেহ ছিল ভোট হবে কি না। কিন্তু প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লন্ডন বৈঠকের পর মানুষের মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে কাঙ্ক্ষিত সময়ে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ছায়া সংসদে কবি নজরুল সরকারি কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক সিকান্দার রেমান ও সাংবাদিক আরিফুজ্জামান মামুন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
এমএমআই/এইচএ/