ঢাকা, রবিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩২, ০৪ মে ২০২৫, ০৬ জিলকদ ১৪৪৬

রাজনীতি

নির্বাচনের জন্য যে দুই সময়কে উপযুক্ত মনে করে জামায়াত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৩০, মে ৩, ২০২৫
নির্বাচনের জন্য যে দুই সময়কে উপযুক্ত মনে করে জামায়াত শনিবার সকালে মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান

ঢাকা: সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সরব বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও আবহাওয়ার কথা বিবেচনা করে তিনি আগামী ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছেন।

জামায়াত আমির বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দুটি সময়কে উপযুক্ত মনে করি। প্রথমত, রোজার আগে ফেব্রুয়ারি মাস। তবে যদি এই সময়ের মধ্যে নির্বাচনকালীন সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন না হয় এবং জনমনে আস্থা তৈরি করার মতো বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া শুরু না হয়, তাহলে এপ্রিল মাসের পরই নির্বাচন আর বিলম্বিত করা উচিত নয়। ’ 

শনিবার (৩ মে) সকালে ঢাকার মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা ও মহানগরী আমির সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান আরও উল্লেখ করেন, ফেব্রুয়ারির শেষ এবং মার্চের বেশিরভাগ সময় রমজান মাস থাকায় তখন নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সরকার যদি আন্তরিকভাবে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেয় এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো সহযোগিতা করে, তাহলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।

বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘আমাদেরকে এখন ফ্যাসিবাদ নয়, বরং ফ্যাসিবাদীদের পতন নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। দুঃখজনক ইতিহাসে জাতি হিসেবে আমরা এখনো একটি ইতি টানতে পারিনি। ’

ডা. শফিকুর রহমান উল্লেখ করেন, ২০১১ সালের এপ্রিলের পর জামায়াতে ইসলামী এমন একটি বৃহৎ সম্মেলনে একত্রিত হওয়ার সুযোগ পায়নি।  

তিনি অভিযোগ করেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীরা দেশ শাসন ও শোষণ করেছে এবং বিরোধী দল, বিশেষ করে ইসলামপন্থিদের ওপর বিভিন্নভাবে দমন-পীড়ন চালিয়েছে।  

তিনি তিনটি বড় ধরনের গণহত্যার অভিযোগ তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে পিলখানায় ৫৭ জন দেশপ্রেমিক সেনার হত্যাকাণ্ড, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে হেফাজতের কর্মীদের হত্যা এবং ২০২৪ সালের জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আরেকটি হত্যাকাণ্ড, যাতে অনেকে শহীদ ও পঙ্গু হয়েছেন।

৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে জামায়াত আমীর বলেন, ওই সময় দেশে কার্যত কোনো সরকার ছিল না। তিনি দলীয় কর্মীদের ধৈর্য ধরে শান্ত থাকার এবং সাধারণ মানুষকেও সংযত থাকার আহ্বান জানান।  

তিনি জানান, অন্যান্য দেশে এমন পরিস্থিতিতে যা ঘটেছে, তার তুলনায় বাংলাদেশে তেমন কিছু ঘটেনি এবং যা ঘটেছে, তাও তারা সমর্থন করেন না। সেদিনই তারা আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার এবং আইনি প্রক্রিয়ায় প্রতিকার চাওয়ার কথা বলেছিলেন।

তিনি আরও জানান, জামায়াত ইসলামীর কর্মীরা সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন এবং কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলেও দল দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। জামায়াত শহীদ পরিবার ও আহতদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া ফেনীর বন্যার শুরু থেকেই তাদের দলের কর্মীরা দুর্গতদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে।

যারা অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ করেছে, তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে যারা হত্যা, গণহত্যা, গুম, খুন ও ধর্ষণ করেছে এবং দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে, তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সোচ্চার থাকব।

ইএসএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।