ঢাকা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ফ্যাসিবাদের পতনের পর আজও জনগণের অধিকার সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে জনগণ দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরতে পারছে না।
বৃহস্পতিবার (১ মে) মহান মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, সংস্কার ও নির্বাচন উভয়ই প্রয়োজন। সরকারের একটি অংশ সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতির ঐক্যে বিভেদ উসকে দিতে চায়।
তিনি আরও বলেন, মানবিক করিডোর দেওয়ার ক্ষেত্রে বিদেশিদের স্বার্থ রক্ষা নয়। সরকারকে সবার আগে দেশের জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনির্দিষ্টকালের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখা যৌক্তিক নয় উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার যাতে মাথাচাড়া দিতে না উঠতে পারে, সেজন্য জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা জরুরি। জনগণের ওপর একক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চাইলে ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ক্ষমতার সুপ্তবাসনা যেন স্বৈরাচারের পথে ঠেলে না দেয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ১৮ কোটি মানুষের দেশে প্রায় আট কোটি মানুষই শ্রমজীবী। এই শ্রমিকরাই উন্নয়ন ও অর্থনীতির প্রাণ। কর্মজীবীদের অবহেলা বা অধিকারবঞ্চিত রেখে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
এর আগে ‘মে দিবস দিচ্ছে ডাক, বৈষম্য নিপাত যাক’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে নয়াপল্টনে শুরু হয় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমাবেশ। দুপুর ২টা ১০ মিনিটে কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের ভিআইপি সড়কে ফকিরাপুল থেকে শুরু করে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত হাজারো শ্রমিকের উপস্থিতিতে সমাবেশটি রূপ নেয় জনসমুদ্রে।
সমাবেশে উত্থাপিত জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ১২ দফা দাবি হচ্ছে— অবিলম্বে সংসদ নির্বাচন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিচার, সব প্রতিষ্ঠানে ডে-কেয়ার সেন্টার, বন্ধ শিল্প চালু, নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান, আউটসোর্সিং বন্ধ করে স্থায়ী পদ সৃষ্টি, অবাধ, গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার, শ্রমিক হত্যার বিচার, শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ, নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন সুরক্ষা নিশ্চিত করা, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা, বৈষম্যহীন জাতীয় পে-স্কেল ও মজুরি হার ঘোষণা, জরুরি পরিষেবা আইনসহ সব কালাকানুন বাতিল এবং খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো।
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শ্রমিক দলের প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, শ্রমিক দলের সমন্বয়কারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ছায়েদুল আলম বাবুল, কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক সুমন ভূঁইয়া, সদস্য সচিব বদরুল আলম সবুজ, মহানগর উত্তর শাখার সদস্য সচিব কামরুল জামান, মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি কাজী মো. আমীর খসরু প্রমুখ।
টিএ/আরবি