ঢাকা, রবিবার, ২৯ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে ১১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৫
যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে ১১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি এটিএম মুসা শামীমের বিরুদ্ধে দলিল লেখক সমিতির ১১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

যুবলীগ নেতা এটিএম মুসা শামীম উপজেলার তুষভান্ডার সাব রেজিস্ট্রি অফিসের একজন দলিল লেখক।

তিনি এখানকার দলিল লেখক সমিতির সভাপতি।

অভিযোগে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি এটিএম মুসা শামীম সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ঘনিষ্টজন। এ সুবাদে মন্ত্রীর ক্ষমতার প্রভাবে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি পদ বাগিয়ে নেন শামীম। এরপর যুবলীগের প্রভাব দেখিয়ে দলিল প্রতি ২০০ করে টাকা চাঁদা তোলেন তিনি। সাবেক মন্ত্রীর ঘনিষ্টজন হওয়ায় দলিল প্রতি চাঁদা দিতে বাধ্য হতেন জমির ক্রেতা ও দলিল লেখকরা। তার দাপটে অসহায় সাধারণ ক্রেতা ও দলিল লেখকরা কোনো প্রতিবাদ করতে পারেননি।  

দলিল প্রতি ২০০ টাকা চাঁদা তুলেই থেমে থাকেননি মুসা শামীম। দলিল লেখক সমিতির সদস্যদের সঞ্চিত টাকার ১১ লাখ টাকাও আত্মসাৎ করেন তিনি। দলিল লেখক সমিতির ৮৫ জন সদস্য তাদের আয়ের একটা অংশ সমিতির ফান্ডে সঞ্চয় করেন। সেই টাকা ঈদসহ বিশেষ সময়ে সব সদস্য নিজেরা ভাগ করে নেন। ২০২৪ সালে ৮ মাসে সঞ্চয় জমা হয় প্রায় ১৮ লাখ টাকা। দুই ঈদে দলিল লেখকদের সাত লাখ টাকা দেওয়া হলেও বাকি ১১ লাখ টাকা সমিতির সভাপতি যুবলীগ নেতা মুসা শামীম আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ সদস্যদের।  

সঞ্চিত টাকা দাবি করলে সমিতির সভাপতি শামীম গর্জন করেন। এমনকি মারধর পর্যন্ত করেন। তার কথার বিরোধিতা করলে সমিতির ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো বলেও দলিল লেখকদের অভিযোগ।

তবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকে আত্মসাৎ করা টাকা ফেরত দিতে চেয়েও ফেরত দেননি শামীম। এমনকি গেল ঈদুল ফিরতেও সমিতির সদস্যরা পাননি তাদের সঞ্চিত অর্থ। যা আত্মসাৎ করেছেন সমিতির সভাপতি যুবলীগ নেতা শামীম। অবশেষে দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সদস্যরা তাদের সঞ্চিত টাকা উদ্ধারে শামীমের বিরুদ্ধে সাব রেজিস্ট্রার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।  

দলিল লেখক আব্দুল মতিন বলেন, বিগত দিনে শামীমের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা যেত না। ৫ আগস্টের পর একটু স্বস্তিতে আছি।

দলিল লেখক জিনাত হোসেন নোবেল বলেন, শামীমকে প্রত্যেক দলিলের বিপরীতে ২০০ টাকা দিতে হতো। না দিলে দলিল আটকাতো না হয় সমিতির ঘরে আটকে রাখতো।

দলিল লেখক তৈয়ুবুর রহমান রাকু বলেন, দলীয় ক্ষমতার প্রভাবে শামীম সিন্ডিকেট তৈরি করেছিলেন। ভুয়া দাতা তৈরি করেও দলিল করে দিতেন তিনি।  

দলিল লেখক আমিরুজ্জামান মতি বলেন, শামীম গত ১৫ বছরে চাঁদাবাজি করে অনেক অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। সমিতির সদস্যদের সঞ্চয়ের ১১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।  

তুষভান্ডার সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি এটিএম মুসা শামীম বলেন, সমিতির নির্বাচনে হেরে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে এ মিথ্যে অভিযোগ তুলেছে প্রতিপক্ষ। সমিতির উন্নয়নমূলক কাজেই খরচ হয়েছে সমিতির টাকা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় কোনো কিছুই করিনি। যা করা হয়েছে, তা সমিতির সদস্যদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এবং সমিতির কল্যাণে করা হয়েছে।  

তুষভান্ডার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের  সাব-রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আরিফ ইসতিয়াক বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্ত করে বিধিমত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৫
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।