সোমবার (৬ মে) বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তারা।
জবানবন্দি শেষে সন্ধ্যায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) স্পেশাল পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যায় গ্রেফতার ইমরান হোসেন মামুন ও ইফতেখার হোসেন রানা। তারা আদালতে বলেছেন, আগে থেকেই নুসরাত হত্যার পরিকল্পনায় ছিলো তারা। সেই অনুযায়ী ৬ এপ্রিল হত্যা চেষ্টার ঘটনায় মাদ্রাসা গেইটে পাহারায় ছিলো তারা। যাতে করে নিরাপদে কিলিং মিশন সম্পন্ন করা যায়।
পিবিআইয়ের এ কর্মকর্তা আরও জানান, এ মাসের মধ্যেই এ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করবেন তারা।
এর আগে শনিবার (২০ এপ্রিল) রাঙামাটি ও কুমিল্লা পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে রানাকে শনিবার ভোরে রাঙামাটি সদরের টিঅ্যান্ডটি আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় মামুনকে।
রানা সোনাগাজীর চরগণেশ এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পরপরই সে পালিয়ে রাঙামাটি চলে গিয়েছিলেন। রানা নুসরাত হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারীদের একজন বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
গ্রেফতারের পর রিমান্ড চেয়ে বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে তাদের ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত শুনানি শেষে সোমবার তাদের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২৭ মার্চ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।
এ ঘটনায় তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাসহ আটজনের নামোল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজহারভূক্ত ৮ আসামীসহ এখন পর্যন্ত ২১জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই, মুল পরিকল্পনাকারী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাসহ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ১২ জন।
মামলা পিবিআইয়ে হস্তান্তরের পর এখন পর্যন্ত মামলার এজহারভুক্ত আট আসামিসহ ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে মুল পরিকল্পনাকারী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাসহ হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের, জোবায়ের আহমেদ, ইমরান হোসেন মামুন ও ইফতেখার হোসেন রানা।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১৯
এসএইচডি/ওএইচ/