বুধবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে শহরের ট্রাংক রোড়ে বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।
বিক্ষোভ মিছিলটি ফেনী শহরের শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন প্রদক্ষিণ করে।
এছাড়াও এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে কর্মজীবী নারীরা। মানববন্ধনে বক্তারা নুসরাতকে আগুনে ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। যতক্ষণ দায়ীদের বিচার না হবে ততক্ষণ কর্মজীবী নারী ঘরে ফিরে যাবে না বলেও জানান।
মানববন্ধন করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ফেনী জেলা সংসদ, খেলাঘর ফেনী জেলা কমিটি, সৃষ্টি মানবাধিকার সংগঠন, সোনাগাজী চর-চান্দিয়া চট্টগ্রামী সমাজসহ বিভিন্ন সংগঠন। এছাড়া এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহায়ের প্রধান সমন্বয়ক মঞ্জিলা আক্তার মিমি প্রতিবাদ জানিয়ে জানান, এমন ঘটনা ন্যাক্কারজনক। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন। যাতে করে শিক্ষক নামের আর কোন নরপশু এমন কাজ করতে সাহস না পায়।
গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা।
এই ছাত্রীর পরিবারের ভাষ্যে, গত ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা তার কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। তারই জেরে মামলা করায় নুসরাতকে আগুনে পোড়ানো হয়। ওই মামলার পর সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢামেকে নিয়ে আসা হয়। তার চিকিৎসায় গঠিত হয় ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু সবার প্রার্থনা-চেষ্টাকে বিফল করে বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে নুসরাত।
বাংলাদেশ সময়: ০৫২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৯
এসএইচডি/আরআইএস/