সোমবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টার মিলনায়তনে ‘মিডিয়া এনগেজমেন্ট অন মনিটরিং ইউপিআর আউটকাম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সভায় এ বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সভা থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনে জাতীয় নির্বাচনের আগে দেওয়া সরকারি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আহ্বানও জানানো হয়।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন আর্টিকেল নাইনটিন এ সভার আয়োজন করে। সভায় গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসহ প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও সাংবাদিক পর্যায়ের ২০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
আর্টিকেল নাইনটিনের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় সরকার গৃহীত ইউপিআর সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণের (মনিটরিং) একটি খসড়া কাঠামো (ফ্রেমওয়ার্ক) উপস্থাপন করা হয়।
সভায় সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান বলেন, দেশে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে করতে হলে নীতির প্রশ্নে সব সাংবাদিককে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং পেশাগত দায়বদ্ধতার জায়গাটিও ঠিক রাখতে হবে।
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সরকারেরও ভূমিকা রাখতে হবে। অভ্যন্তরীণ নিপীড়ন বন্ধে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় বিদ্যমান আইনগুলো মানা হচ্ছে তা সরকার মনিটর করতে পারে।
প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, আগে মানহানির মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন বা জামিন লাভের সুযোগ একজন সংবাদকর্মীর ছিল। বর্তমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলেই গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যেতে হচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে সব সরকারের আমলেই সাংবাদিক-মানবাধিকার কর্মীরা বৈরী দৃষ্টিভঙ্গির শিকার হয়ে আসছেন। এ ধারা বর্তমানেও অব্যাহত আছে।
সভায় সাংবাদিকরা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে বর্তমান সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছিল। সেই উদ্যোগ বাস্তবায়নে কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে তা সাংবাদিকদের জানানো প্রয়োজন।
সাংবাদিকরা আরও বলেন, নিজ প্রতিষ্ঠানে হয়রানি-নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধে সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে। সাংবাদিকদের মধ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী, রিপোর্টার্স উইথআউট বর্ডারের বাংলাদেশ প্রতিনিধি সেলিম সামাদ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সিনিয়র সাংবাদিক খায়রুজ্জমান কামাল, বিবিসি বাংলার প্রতিনিধি ফারহানা পারভীন, বেসরকারি দূরন্ত টেলিভিশনের গবেষণা কর্মকর্তা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভাপতির বক্তব্যে ফারুখ ফয়সল বলেন, নাগরিক সংগঠনগুলো সরকারের প্রতিপক্ষ নয়, সহযোগী। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ মানবাধিকারের বিভিন্ন ইস্যুতে সম্মিলিতভাবে কাজ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে কাউকে পেছনে না রেখে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের কথা বলা হয়েছে। সেই সমাজে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ সব ধরনের মানবাধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে আর্টিকেল নাইনটিন সরকার, নাগরিক ও নাগরিক সংগঠনের মধ্যে ইতিবাচক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৯
টিআর/এএ