ঢাকা, বুধবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

বৈশাখী উচ্ছ্বাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:২২, এপ্রিল ১৪, ২০১৮
বৈশাখী উচ্ছ্বাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাবিতে বর্ষবরণ/ছবি: ডি এইচ বাদল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। মুসলমান-হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধকে এক মঞ্চে আনার শাশ্বত কোনো উৎসব যদি থেকেই থাকে বাঙালির, তা এই পহেলা বৈশাখ। বাংলা নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রমনার বটমূলে ছায়ানটের শিল্পীদের পরিবেশনায় বর্ষবরণের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়।

এর পরে বর্ষবরণের অন্যতম আয়োজন মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে। সকাল থেকে মানুষের উপস্থিতি কম থাকলেও মঙ্গল শোভাযাত্রার পর মানুষের আগমনে ঢাবির সর্বত্র বৈশাখের উচ্ছ্বাস পরিলক্ষিত হয়।

ক্যাম্পাসের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি), রাজু ভাস্কর্য, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর, হাকিম চত্বর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বর, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ চত্বর, ডাকসু, কলা ভবন, মল চত্বরসহ সব জায়গা ছিলো বাংলা নববর্ষ বরণ করতে আসা দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত। এছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও ছিল মানুষের সরব উপস্থিতি।

ছেলেদের বৈশাখের রঙে রঙিন পাঞ্জাবি আর মেয়েদের শাড়িই জানান দিচ্ছে বৈশাখের উপস্থিতি। ছোটদের গালেও লেখা ‘শুভ নববর্ষ’। এছাড়া বিভিন্ন বয়সী মানুষেরা এসেছেন বৈশাখী সাজে। তারা ক্যাম্পাস ঘুরে ঘুরে দেখছেন, কেউ বসে আড্ডা দিচ্ছেন। আবার অনেকে বৈশাখী অনুষ্ঠান উপভোগ করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে মিরপুর থেকে স্ত্রী সেঁজুতি ও পুত্র সাদমানকে নিয়ে এসেছেন মাহবুব হোসেন।

বিকেলে মলচত্বরে বৈশাখী কনসার্টে গান শোনার সময় বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘রাজধানীতে এখন বিনোদনের জায়গা সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। বর্ষবরণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক আয়োজন থাকে। এজন্য পরিবারের সবাইকে নিয়ে এখানে এলাম। ’

অপরদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ বর্ষবরণের জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সকালে বটতলায় সঙ্গীত বিভাগের বৈশাখ বরণের অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান। ‘ঢোলক বাজে, কাঁসর বাজে, বাজে খুশির ঢাক/ বছর ঘুরে নতুন সাজে এলো যে বৈশাখ’ শিরোনামে কলা অনুষদের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ খেলাঘর আয়োজন করে বৈশাখী উৎসব।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের মলচত্বরে আয়োজন করা হয়েছে বৈশাখী কনসার্টের। ডাকসুর সামনে আবৃত্তি সংগঠনগুলো আয়োজন করে বৈশাখের অনুষ্ঠান। টিএসসিতে বাঁধন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিনামূল্য রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করার কর্মসূচি পালন করে।

বিভিন্ন কারণে এবারের বর্ষবরণ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক উৎকণ্ঠা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শবনম মুস্তারিন বাংলানিউজকে বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে একটু উদ্বিগ্ন ছিলাম। তবে সবকিছু কাটিয়ে বর্ষবরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো ছিল।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ক্যাফেটেরিয়ায় পান্তা-ইলিশের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী, সহকারী প্রক্টর আবদুর রহিম, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স, বাম সংগঠনের নেতারাসহ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আসিফ ত্বাসীন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নয়নের নেতৃত্বে সমিতির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৮
এসকেবি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।