ঢাকা, বুধবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

ঐতিহ্যের জলকেলি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:৪৬, এপ্রিল ১৪, ২০১৮
ঐতিহ্যের জলকেলি জলকেলিতে মেতেছেন তরুণ-তরুণীরা-ছবি-বাংলানিউজ

খাগড়াছড়ি: বৈসাবির আনন্দে ভাসছে পাহাড়ি জনপদ। খাগড়াছড়ির পাড়া-মহল্লায় এখন আনন্দের রেশ। ছেলেবুড়ো সবাই মেতেছে উৎসবের আনন্দে। শনিবার (১৪ এপ্রিল) বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে মারমা জাতিগোষ্ঠীর সাংগ্রাই ‍উৎসব।

আর এই উৎসবের প্রধান আকর্ষণ জলকেলি বা পানিখেলা। পারস্পরিক মৈত্রীর বন্ধন অটুট রাখা এবং পুরাতন বছরের গ্লানি মুছে ফেলাই এই জলকেলির মূল উদ্দেশ্য।

জলকেলিস্থলের চারপাশে হাজারো মানুষের ভিড়। পর্যটক, অতিথি, সংবাদকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ। এমন দৃশ্য দেখতে এবং স্মরণীয় করে রাখতে সবাই ব্যস্ত।  
 
একদিকে বর্ণিল সাজে তরুণীর দল। অন্য প্রান্তে ঐতিহ্যবাহী লুঙ্গিপরা তরুণের দল। তাদের পাশে বড় হাড়িভর্তি পানি, হাতে আছে জগ। মাঝে নির্দিষ্ট দূরত্বে থেকে বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় একে অপরের প্রতি পানি ছোড়াছুড়ি। নিজেদের ঐতিহ্যবাহী বর্ণিল সাজে সেজে জলকেলিতে মেতে ওঠে মারমা তরুণ-তরুণীরা।

জলকেলিতে মেতেছেন তরুণ-তরুণীরা-ছবি-বাংলানিউজএদিকে এই উৎসব দেখতে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে। বাংলাদেশে বসবাসরত পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীগুলোর কৃষ্টি, সংস্কৃতি ঐতিহ্য দেখে তারাও খুশি। তিনদিনের সাংগ্রাই উৎসব তিন নামে পরিচিত। প্রথমদিন সাংগ্রাই, দ্বিতীয় দিন আক্যে এবং শেষ দিন আতাদা নামে উৎসব উদযাপন করা হবে।  

জলকেলিতে মেতেছেন তরুণ-তরুণীরা-ছবি-বাংলানিউজ
বাঁশরী মারমা, মাস্রাংচিং মারমা বলেন, প্রতি বছর এই উৎসবের জন্য অপেক্ষায় থাকি। ছেলেবুড়ো সবাই আপন সংস্কৃতি, ঐতিহ্য নিয়ে মেতে থাকি। আর সাংগ্রাই’র প্রধান আকর্ষণ জলকেলি। এটি আমাদের কাছে পবিত্রতার প্রতীক। পুরাতনকে ভুলে, নতুনের শুদ্ধতা বয়ে আনে এই উৎসব। সাংগ্রাই উৎসব আমাদের জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে শক্তি জোগায়।
 
মংসাই মারমা, আপ্রুশি মারমা বলেন, দিনে দিনে সাংগ্রাই উৎসব সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হচ্ছে। আমরা এই উৎসবের মাধ্যমে আমাদের শেকড় খুঁজে পাই। আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি যুগের পর যুগ বাঁচিয়ে রাখতে চাই।

জলকেলিতে মেতেছেন তরুণ-তরুণীরা-ছবি-বাংলানিউজ
শনিবার সকালে পানখাইয়া পাড়া বটতল প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য সাংগ্রাইং র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালির উদ্বোধন করেন শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। ঐতিহ্যবাহী ও বৈচিত্র্যপূর্ণ মারমা পোশাকে বর্ণিল র‌্যালিটি শহর প্রদক্ষিণ করে।
 
এসময় পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
  
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, ১৪ এপ্রিল, ২০১৮
আরআর/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।