শনিবার (১৪ এপ্রিল) আনন্দ উচ্ছ্বাসে নতুন বছরকে বরণ করে নিচ্ছেন সবাই। পুরনো কষ্টকে ভুলে নতুনকে পাওয়ার আশায় এ আনন্দ।
নগরের অগণিত মানুষের হাজারো কথার আওয়াজের মধ্যেও কানে ভেসে আসছে মাইকে বাজা বৈশাখের গান, ‘আইলো আইলো আইলো রে, রঙ্গে ভরা বৈশাখ আবার আইলো রে...’। গানের এ রঙ মুখে মেখেই নিজেদের সাজাতে এবং অন্যদের বৈশাখী শুভেচ্ছা জানাতে ব্যস্ততা দেখা গেছে শিশু ও কিশোরীদের মধ্যে। বিশেষ করে রমণীদের কড়া পারফিউম, ফুলের মুকুট, হালকা মেকআপ আর গালের আল্পনার রঙে আজ শুধু নববর্ষের ঘ্রাণ।
রং তুলির আঁচড়ে লাল-সবুজে ‘এসো হে বৈশাখ’ গালে লিখে শাহবাগে ঘুরছিলেন নুসরাত জাহান। বললেন, বৈশাখকে স্বাগত জানাতে এবং নিজেকে বৈশাখের রঙে রাঙাতেই এ ছোট্ট আয়োজন। তার সঙ্গী ফায়রুজের গালে লেখা ‘শুভ নববর্ষ’। তিনি বললেন, সবাইকে তো আর একসঙ্গে ‘শুভ নববর্ষ’ বলা সম্ভব নয়, তাই এ চিন্তা। আমার দিকে যে তাকাবে, তাকেই আমি শুভ নববর্ষ জানাচ্ছি। এভাবে সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানানোর মধ্যেও আলাদা একটা আনন্দ আছে।
নিজের গালে রঙিন একতারা এঁকে অন্যদের গাল রাঙাচ্ছিলেন চারুকলার শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান। বললেন, বৈশাখের প্রথম দিনে আমাদের আনন্দগুলো ভাগাভাগি করে নিতেই হাতে রঙ তুলি নিয়ে ঘোরা। শিশু বা কিশোর-কিশোরীদের গালে যখন তুলির আঁচড় দিয়ে বৈশাখ এঁকে দেই, তাদের আনন্দ দেখে নিজেরও ভালো লাগে। বৈশাখের রঙে যেন তখন আমরা সবাই একাকার হয়ে যায়।
মাথায় চুলে ঝুঁটি বেঁধে আর ক্লিপ এঁটে বাবার কোলে চড়ে শোভাযাত্রায় এসেছে ছোট্ট মেয়ে মৌরী। দু’টো গালই তার লাল-সাদা আর হলুদ রঙে রাঙানো। এক গালে রঙের আঁচড়ে ‘১২২৪ বৈশাখ’ আর অন্য গালে ‘শুভ নববর্ষ’ লেখা। ছোট্ট ছোট্ট আলতো কথায় মৌরী বললো, ‘রঙ আমার খুব ভালো লাগে। আমি বাবার কাছে চেয়েছি, বাবা আন্টির কাছ থেকে আমার গালে লাগিয়ে দিয়েছে। ’ মৌরীর বাবা বললেন, উৎসব আর আনন্দতো মূলত বাচ্চাদের জন্যই। ওদেরকে একটু সুন্দর করে সাজালে নিজেদেরও ভালোলাগে।
মৌরী অথবা নুসরাতের মতো হাজারো মানুষ আজ নিজেদের এভাবে রাঙাচ্ছেন বৈশাখের রঙে। এ রঙ নতুনের রঙ, পুরোনো সব গ্লানি ভুলে গিয়ে নতুনকে আমন্ত্রণ জানানোর রঙ। এ রংগুলোই রাঙিয়ে তুলবে আমাদের সত্ত্বাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৮
এইচএমএস/আরবি