ঢাকা, বুধবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

বর্ণিল আয়োজনে রাজশাহীতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:২৮, এপ্রিল ১৪, ২০১৮
বর্ণিল আয়োজনে রাজশাহীতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন রাজশাহীতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন/ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাজশাহীতে উদযাপিত হচ্ছে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ।বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার কারণে সকাল থেকে উদযাপনের সব কেন্দ্রবিন্দু ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।

শনিবার (১৪ এপ্রিল) নতুন বছরের প্রথম সূর্য উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের ঢল নামে চারুকলায়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মেতে ওঠে আনন্দ-উল্লাসে।

প্রাণ ভরে দেখে নিয়েছেন একটি জাতির চিরায়ত সংস্কৃতি, আবেগ-অনুভূতি কতটা মধুর হতে পারে। সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে বিশাল মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়।

‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ এ প্রতিপাদ্যে এবারের শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা। এ সময় শোভাযাত্রায় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এমএ বারীসহ অনুষদের আরও শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।  

এবারের বর্ষবরণের মঙ্গল শোভাযাত্রার থিম ছিল ‘ষাড়’ ও ‘পায়রা’। কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। কৃষির সঙ্গে ষাড়ের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। যার সাহায্যে কৃষকরা চাষ করে জমিতে ফসল উৎপাদন করে। এছাড়া পায়রা হলো শান্তির প্রতীক।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অনন্য নজির স্থাপন করেছে। যা শান্তির বার্তা প্রকাশ করে। এসব কিছু বিবেচনা করে এই থিম দুটিকে রাখা হয়েছিল।

বর্ষবরণ উপলক্ষে সকাল থেকেই ঢাক, ঢোল আর গান বাজনায় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। বিভিন্ন বিভাগ আর সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও বের করা হয় শোভাযাত্রা। কৃষক, জেলে সাপুড়েসহ বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়ে পুরো ক্যাম্পাস মাতিয়ে তোলেন শিক্ষার্থীরা। কেউবা আবার সাজেন বর-কনে, যা এক ভিন্নমাত্রা এনে দেয় পুরো ক্যাম্পাসে।

শোভাযাত্রা শেষে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে চারুকলা অনুষদ চত্বরে শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয় বিভিন্ন লোকসঙ্গীত, নাটক, নাচ, যন্ত্রসঙ্গীত ও কবিতা আবৃতি।

পুরাতন বছরের গ্লানি ভুলে নতুনকে সাদরে বরণ করে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ শোভাযাত্রা বের করে। নববর্ষকে স্বাগত জানাতে শোভাযাত্রা বের করে আইন বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ, পরিসংখ্যান বিভাগ, দর্শন বিভাগ, নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগ, বাংলা বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ, ফলিত গণিত বিভাগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সবকটি বিভাগ।

চারুকলা অনুষদ চত্বর, পুরাতন ফোকলোর চত্বর, টুকিটাকি চত্বর, শহীদুল্লাহ ও কলাভবন চত্বরসহ লোকারণ্য হয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাস, যেন তিল ধারনের ঠাঁই ছিলনা। আইন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া বলেন, বর্ষবরণ উপলক্ষে পুরো ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ক্যাম্পাসকে আজ ভিন্ন রূপে দেখতে পেরে তার ভালো লেগেছে।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রাশেদ রিন্টু বলেন, অন্যবারের তুলনায় এবারের বৈশাখে উৎসবের আমেজ কিছুটা কম মনে হচ্ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অবস্থা স্থিতিশীল ছিল না। এর প্রভাব উৎসবে পড়েছে বলে তিনি মনে করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৮
এসএস/এসএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।