ঢাকা, বুধবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

প্রাণের উৎসবে বাঙালি সংস্কৃতির যত সব ঐতিহ্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭:০৮, এপ্রিল ১৪, ২০১৮
প্রাণের উৎসবে বাঙালি সংস্কৃতির যত সব ঐতিহ্য বর্ষবরণের উৎসবে ছিল লোকজ সংস্কৃতির নানা ঐতিহ্য। ছবি: আরিফ জাহান/বাংলানিউজ

বগুড়া: পাশাপাশি বসে ছিলেন বর-কনে। বর-কনের পরনে ছিল বিয়ের সাজপোশাক। চড়েছেন গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার গাড়িতে। সেই বর-কনে নিয়ে রূদ্ধশ্বাসে ছুটে চলছে ঘোড়া। নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক সময় ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরা হচ্ছিল।

শিল্পীর রং তুলির আঁচড়ে ও কারকার্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এমনটা। যদিও কোনো কিছুই বাস্তব ছিলো না।

তবে বাস্তবের আকৃতি দেওয়া হয়েছে। বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে এভাবেই ফুটিয়ে তোলা হয় বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রায়।
 
পাশেই ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে রূদ্ধশ্বাসে সামনের দিকে ছুটে চলছিলেন আরেকজন। কিছুটা ফাঁকেই শোভা পাচ্ছিল গ্রামবাংলার পেঁচা। পেছনেই শোভা পাচ্ছিল ইয়া বড় হাতি। মুখের দু’কোনায় সাদা রংয়ের দাঁত বেরিয়ে ছিলো। আস্ত জ্যান্ত দেখালেও তাতে ছিল না কোনো প্রাণ। স্বভাবতই হাঁকডাক করার কোনো সুযোগ ছিলো না। ছিলো না হেলেদুলে হেঁটে চলার কোনো ক্ষমতা। এ কারণে ভ্যান-রিকশার বাহনই  ছিল তাদের চলার ভরসা।  
 
বর্ষবরণের উৎসবে ছিল লোকজ সংস্কৃতির ঐতিহ্য ঘোড়াও।  ছবি: আরিফ জাহান/বাংলানিউজশনিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত বাংলা বর্ষবরণে অনুষ্ঠিত মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাঙালি সংস্কৃতির অংশ হিসেবে এসব প্রতিকৃতি বহন করা হয়। এভাবে অশুভ শক্তিকে বিদায় জানানো হয়। উদযাপন করা হয় অসাম্প্রদায়িক বাঙালির সার্বজনীন উৎসব।
 
ঢাক-ঢোলের তালে তালে চলতে থাকে এ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় দেখা যায় গ্রামবাংলার বিলুপ্তপ্রায় পালকি। সেই পালকিতে করে কনে যাচ্ছেন বরের বাড়িতে। সামনেই মাথায় মাথাল পরে বসে আছেন কৃষক। মাঝাই মাছ রাখার খালই আর হাতে শোভা পাচ্ছিলো পলই। এর মাধ্যমে গ্রামবাংলার কৃষি ও কৃষকদের চালচিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
 
বাঙলা নববর্ষে পালনে এত সব আয়োজন। এসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে চিরন্তন বাঙলার মাছ, মাথাল, ময়ূর, হাতি, পাখ-পাখালিসহ বৈচিত্রময় লোকজ সংস্কৃতির নানা উপাদান।
 
শারমিন, মৌসুমী, শাকিল মাসুদ বাংলানিউজকে জানান, পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব। এই আয়োজনে থাকতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে হচ্ছে। খুব ভাল লাগছে। বাঙলার চিরায়ত সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যাচ্ছে।
বাঙালির প্রাণের এ উৎসবের মধ্য দিয়ে আগামী দিনের সব অমঙ্গল দূর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এসব তরুণ-তরুণী।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৮
এমবিএইচ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।