এ বছর মাঠের পর মাঠ জুড়ে মুক্ত বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের পাকা ধান। তারপরও স্বস্তি নেই তাদের মনে বরং দুঃশ্চিন্তায় কাটছে তাদের সময়।
খালিয়াজুরী উপজেলা সদরের কৃষক রঈছ উদ্দিন, আব্দুল মোতালেব বাংলানিউজকে জানান, তারা ভেবেছিলেন পরিবার, প্রতিবেশীসহ সবাইকে নিয়ে পহেলা বৈশাখ বেশ আনন্দে কাটাবেন।
ফসলের ব্যাপক ফলন হওয়ায় সন্তুষ্ট থাকলেও আনন্দ এবার দুঃশ্চিন্তায় রূপ নিয়েছে। কারণ শ্রমিক সঙ্কটে মাঠভরা ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারছেন না তারা।
রঈছ ও মোতালেবের মতো আরো অনেকেই শ্রমিক সঙ্কটে ফসল কাটতে না পারার কথা জানান। আর সময় মতো ফসল ঘরে তুলতে না পারলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও মনে করেন তারা।
একই সমস্যার কথা বলেন খালিয়াজুরী উপজেলার বাসিন্দা ‘হাওর রক্ষায় তারুণ্যের আর্তনাদ’র সভাপতি স্বাগত সরকার শুভ।
তিনি জানান, প্রাকৃতিক পরিবেশ পরিস্থিতি মোটেও ভালো না। বৃষ্টি হচ্ছে যখন তখন। এর মধ্যে তিনবার শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। কাজেই সময় চলে গেলে ফসল কেটে শেষ করতে না পারলে মাঠের ফসল মাঠেই থাকবে।
হাওরে প্রতিবার সব ধান একসঙ্গে পাকার ফলে শ্রমিক সঙ্কটে পড়তে হয়। সরকার যদি কৃষকদের ধান কাটার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি দেন তবে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণ সম্ভব বলে মনে করেন শুভ।
নেত্রকোনায় ১ লাখ ৮১ হাজার ২৩৮ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। খালিয়াজুরী হাওরাঞ্চলে শুধু আবাদ হয়েছে ২০ হাজার হেক্টর জমি।
বাংলানিউজকে এসব তথ্য জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিলাস চন্দ্র পাল।
তিনি আরো জানান, জেলায় এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। তবে লক্ষ্যমাত্রার থেকে ৩ হাজার ৬৯২ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হওয়ায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১১ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করেন তিনি।
উপ-পরিচালক বিলাস চন্দ্র পাল দাবি করেন, এ সপ্তাহেই হাওরে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। ফসল ঘরে তুলতে পারলে বন্যার ক্ষতি পোষাবে কৃষকের।
বাংলাদেশ সময়: ০৬১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৮
আরএ