ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

অন্য কেউ এই অর্জন ধরে রাখতে পারবে না

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:০৯, এপ্রিল ১২, ২০১৮
অন্য কেউ এই অর্জন ধরে রাখতে পারবে না জাতীয় সংসদে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী/ ফাইল ছবি

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের সুযোগ পেলে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ অর্জন সম্ভব হবে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অন্য কেউ ক্ষমতায় এলে এই অর্জন ধরে রাখতে পারবে না।

বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) রাতে দশম জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশকে উন্নত করতে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি।

এজন্য পরিকল্পিতভাবে কাজ করতে হয়েছে। আমরা এই অর্জন ধরে রাখতে পারব, যদি বাংলাদেশের জনগণ আমাদের সামনের নির্বাচনে বিজয়ী করে। চলতি বছরের শেষে নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। সেই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ যদি নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদেরকে জয়যুক্ত করে আর আমরা যদি সরকার গঠন করে দেশ সেবার সুযোগ পাই। আর এই অর্জনটা যদি ধরে রাখতে পারি, তাহলে আগামী ৬ বছরে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ অবশ্যই হবে, এটা আমরা অর্জন করবই করবো।  

শেখ হাসিনা বলেন, নিজে কী পেলাম না পেলাম সেই হিসাব আমি করি না। আর সেই হিসাব করবও না। শুধু এতটুকু দেখি, দেশের মানুষ কী পেল; আর সেটাই আমার বিবেচ্য বিষয়। জাতির পিতা সোনার বাংলা চেয়েছিলেন, আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।  

তিনি বলেন, যে তিন শর্ত পূরণ করলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়া যায়, আমরা তিনটি শর্তই পূরণ করেছি। শুধু শর্ত পূরণ না, আমরা অনেক দূর এগিয়ে আছি। আর যতটুক এগিয়ে আছি তাতে আগামী ৬ বছরে যতটকু অর্জন করতে হবে, সেটা আমরা এরইমধ্যে পূরণ করে ফেলেছি। কাজেই আগামী ৬ বছরের হিসাব-নিকাশে আমাদেরকে কেউ পেছনে ফেলতে পারবে না। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অবশ্যই প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। জনগণের ওপরই আমার ছেড়ে দিই। জনগণ যদি ভোট দেয়, তাহলে আমরা ক্ষমতায় আসব। তবে শুধু এতটুকু বলতে চাই, আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে শর্তগুলো এমন পর্যায়ে করে দিয়েছি, যদি আমরা আর ক্ষমতায় না আসি, অন্য কেউ যদি আসে, যদি তারা এটাকে ধ্বংস করতে না চান বা এই উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে পারে- তাহলে কিন্তু আমাদেরকে কেউ পেছনে হটাতে পারবে না।

সন্দেহ প্রকাশ করে সংসদ নেতা বলেন, এখানে আমাদের সন্দেহ আছে। সন্দেহ আছে, এই কারণে যে ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে যে উন্নয়নগুলো করেছিল; ২০০১ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসে সেগুলো একে একে ধ্বংস করে দিয়েছিল। যেমন বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম, ১৯৯৬ সালে ৪০ লাখ মেট্রিকটন খাদ্য ঘাটতি নিয়ে যাত্রা শুরু করি। আর সেই বাংলাদেশকে ২০০১ সালে ২৬ লাখ মেট্রিকটন খাদ্য মজুদ রেখে আমাদের ৫ বছর সময় সমাপ্ত করি। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে আবার খাদ্যে ঘাটতির দেশে পরিণত করল। বিদ্যুৎ ঘাটতি হয়, শিক্ষার হার কমে যায়। এর থেকেই বোঝা যায়, যদি ক্ষমতার পরিবর্তন হয়ে ওই বিএনপি-জামায়াত আবার আসে তাহলে এই উন্নয়ন ধরে রাখতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে, পারবে না। অতীত উদাহরণ আছে।

দেশের এই উন্নয়নের জন্য বিরোধী দলকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিরোধী দল হিসেবে তারা সংসদে সত্যিকার ভূমিকা রাখছে। অতীতে শুধু গালিগালাজ হতো। উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার ফলে ঋণ প্রাপ্তির সুযোগ বাড়বে। ঋণ দাতারা শর্ত দিতে পারবে না। শর্তের বেড়াজালে আটতে পারবে না। কারণ আমরা একটা মর্যাদা অর্জন করেছি।

তিনি বলেন, আমাকে ধন্যবাদ দেওয়ার বেশি প্রয়োজন নেই। দেশের উন্নয়ন করা এটা আমার দায়িত্ব কর্তব্য। সরকার যখন গঠন করি তখন মনে করি সুযোগ পেয়েছি, দেশের মানুষের উন্নয়নে দেশের উন্নয়ন। সেভাবেই কাজ করে যাই। এই অর্জনের জন্য আমি জনগণকে ধন্যবাদ জানাই, কারণ জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে সুযোগ করে দিয়েছিল। আমি এই অর্জনটা জনগণকে উৎসর্গ করছি। জাতির জনক বলছিলেন বাঙালিকে দাবায়া রাখা যাবে না। ১৬ কোটি মানুষকে যে দাবায়া রাখা যায় না সেটাই প্রমাণ হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ অর্জন করতে পারব এই আস্থা আমার আছে। জাতির পিতার আত্মা নিশ্চয়ই আমাদের এই অর্জন দেখছেন। তিনি আমাদের সঙ্গে আছেন বলেই এই অর্জন করতে পারছি।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৮
এসকে/এসএম/এমআইএইচ/এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।