ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

যাত্রীবেশে অবস্থান করে ছিনতাইকারী!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:৫৩, এপ্রিল ১২, ২০১৮
যাত্রীবেশে অবস্থান করে ছিনতাইকারী! র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা: ছিনতাইয়ের কৌশল হিসেবে একটি ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে যাত্রীবেশে অবস্থান করতো। তারা কখনো বিমানবন্দরে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের টার্গেট করে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের পিন নম্বর নিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো। আবার কখনো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মাসোয়ারা আদায় করতো।

বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।  

বুধবার (১১ এপ্রিল) ও বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর রূপনগর ও সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের ছয় সদস্যকে আটকের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- মো. আনিসুর রহমান, মো. আরিফুল ইসলাম, খালেদুল ইসলাম বাপ্পি, আব্দুর রহমান, জানু মিয়া ও মো. শাহজাহান মিয়া।  

এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত দু’টি নকল ওয়াকিটকি সেট, দু’টি বুট, পুলিশের দু’টি নকল আইডি কার্ড, একটি ধারালো ছুরি, আটটি মোবাইল, বিদেশি পিস্তল, প্রাইভেটকার এবং এক হাজার ৫শ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, আনিসুর ওই চক্রের মূল হোতা। তারা ২০০৯ সাল থে‌কে এ চক্রের সঙ্গে জ‌ড়িত। আ‌নিসুর তার নিজের প্রাইভেটকার ছিনতাই কাজে ব্যবহার করতো। আ‌রিফুল প্রথমে গার্মেন্টস শ্র‌মিক ছিলো, কিন্তু পরে প্রাইভেটকার চালানো শিখে এ চক্রে জ‌ড়িয়ে পড়ে।

‌তি‌নি বলেন, খালেদুল একজন জুয়েলা‌রি ব্যবসায়ী। সে ছিনতাইয়ের স্বর্ণ তার নিজের দোকানে এনে বিক্রি করতো। আব্দুরও একজন গা‌ড়ি চালক। জানু মিয়া যাত্রাবা‌ড়ীতে স্যুপ ও হা‌লিম বি‌ক্রি করতো। পরে সাইট লেবারের কাজের পাশাপা‌শি ছিনতাইয়ে সরাস‌রি অংশ নেয়। শাহজাহান একজন ব্যবসায়ী। তার থাই ও অ্যালু‌মি‌নিয়ামের দোকান আছে। গ্রেফতার শাহজাহান ও আ‌রিফুল সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে।

এ চক্রের একজন সদস্য এয়ারপোর্ট, রেল ও বাস স্টেশনের যাত্রীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে একই স্থানে যাবে বলে চক্রের অন্য সদস্যের গা‌ড়ি ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে রওনা দেন। পরে পথে যাত্রীদের সব‌কিছু লুট করে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। তারা বিত্তশালীদেরও ম‌নিট‌রিং করে। বি‌ভিন্ন লেনদেনের সময় তারা টার্গেট করে ছিনতাই করে। ছিনতাইয়ের সময় তারা ভিক‌টিমদের ওপর কে‌মিক্যাল ব্যবহার করে। এতে অনেক সময় ভিক‌টিমদের অনেক বড় ধরনের শা‌রী‌রিক ক্ষ‌তিও হয়।

এছাড়াও চক্রটি যাত্রীদের কাছ থেকে অর্থ ও মূল্যবান জিনিসপত্র নেওয়া ছাড়াও তাদের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডেরর পিন নাম্বার নিয়ে এটিএম বুথ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো। যারা পিন নম্বর দিতো না তাদের শারীরিক নির্যাতন করতো।

তিনি বলেন, চক্রটি বিভিন্ন স্থানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাসোয়ারা আদায় করতো। ঢাকার বিভিন্ন অর্থশালী ব্যক্তির গতিবিধি দীর্ঘদিন ধরে অনুসরণ করে সুযোগ বুঝে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায় করতো।  

আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান মুফতি মাহমুদ খান।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৮
পিএম/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।