ঢাকা, বুধবার, ১২ ভাদ্র ১৪৩২, ২৭ আগস্ট ২০২৫, ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

সুস্থ হলে রাজীবের চাকরির ব্যবস্থা করবে সরকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:৪২, এপ্রিল ৫, ২০১৮
সুস্থ হলে রাজীবের চাকরির ব্যবস্থা করবে সরকার

ঢাকা: রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বেপরোয়া দুই বাসের চাপায় হাত হারানো সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব হোসেন (২১) এখনও আশঙ্কামুক্ত নন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে তিনি সুস্থ হওয়ার পর সরকার তার চাকরির ব্যবস্থা করে দেবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হসপাতালে চিকিৎসাধীন রাজীবকে দেখতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, একটি দুঃখজনক সড়ক দুর্ঘটনায় হাত হারানো রাজীবকে দেখতে এসেছি।

দুর্ঘটনার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে তাকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গতকাল থেকে ঢামেক হাসপাতালে তার পুরোদমে চিকিৎসা চলছে।

রাজীব এখনো আশঙ্কামুক্ত নন উল্লেখ করে নাসিম বলেন, এ মুহূর্তে জীবনরক্ষাই বড় বিষয়। নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার চিকিৎসা চলছে। সবাই দোয়া করবেন।

সরকারের পক্ষ থেকে রাজীবকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুস্থ্য হলে তাকে আমরা যে কোনো একটা সংস্থায় চাকরির ব্যবস্থা করবো। আর হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী বাস মালিকরা সব চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে। রাজীবকে দেখতে ঢামেক হাসপাতালে আসেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।  ছবি: বাংলানিউজরাজীবের কৃত্রিম হাত প্রতিস্থাপন করা হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুস্থ হওয়ার পর মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সম্ভব হলে সেটা করা হবে।

শমরিতায় চিকিৎসা ব্যয়ের বাকি টাকা তিনি নিজে বহন করবেন জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সেখানে একদিনে এক লাখ ২৬ হাজার টাকা বিল আসার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এসময় ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, বুধবার (৪ এপ্রিল) বিকেল ৫টার দিকে রাজীবকে আমাদের এখানে নিয়ে আসা হয়। রাতেই আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে। সে মাথায়ও আঘাত পেয়েছে এবং ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাই তাকে আশঙ্কামুক্ত বলতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।

এ মুহূর্তে তার হাত প্রতিস্থাপন করার সুযোগ নেই, ভবিষ্যতে দেখা যাবে। তার সব চিকিৎসা ব্যয় সমন্বয় করার কথাও জানান ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক।

মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের দিক থেকে ফার্মগেটমুখী একটি দ্বিতল বিআরটিসি বাস সার্ক ফোয়ারার কাছে পান্থকুঞ্জের পাশে সিগনালে থেমে ছিলো। সে বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন রাজীব। খানিকবাদেই একই দিক থেকে আসা স্বজন পরিবহন নামের একটি বাস দ্রুতগতিতে এসে দ্বিতল বাসের বাঁ পাশের ফাঁক দিয়ে ঢুকে সামনে যাওয়ার (ওভারটেক) চেষ্টা করে।

দুই গাড়ি তখন টক্কর দিতে গেলে চাপে পড়ে ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ফটকে দাঁড়ানো রাজীবের। হাতটি দ্বিতল বাসের সঙ্গে ঝুলছিলোও তখন। তাৎক্ষণিকভাবে রাজীবকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নেওয়া হলেও হাতটি আর জোড়া দেওয়া যায়নি। মঙ্গলবারই রাজীবের অস্ত্রোপচার করা হয়।

এ বিষয়ে এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রাজীবকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। একইসঙ্গে তার চিকিৎসা ব্যয় বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের মালিকদের বহন করতে নির্দেশ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৮
পিএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।