অনিয়ম ও গাফিলতির অভিযোগ এনে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজকে আর্থিক জরিমানাসহ ৯টি দাবি জানিয়েছে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারের সদস্যদের ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তারের মামা লিয়ন মীর, তৃতীয় শ্রেণির মারিয়ম উম্মে আফিয়ার মা উম্মে তামিমা, অষ্টম শ্রেণির তানভীর আহমেদের বাবা রুবেল মিয়া। তারা নিহত ছাত্রছাত্রীদের পরিবারের পক্ষ থেকে নয়টি দাবি পেশ করেন।
ফাতেমার মামা লিয়ন মীর বলেন, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও অনিয়মই এই বড় রকমের প্রাণহানির জন্য দায়ী। মাইলস্টোনে ছিল না কোনো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, ছিল না সতর্কীকরণ ব্যবস্থা। আমরা চাই না ভবিষ্যতে আমাদের মতো কেউ সন্তানহারা হোক।
তিনি প্রথম তিনটি দাবি পাঠ করেন। দাবি তিনটি হলো, আইন অমান্য এবং নিয়ম ভঙ্গ করে কোচিং বাণিজ্যের মাধ্যমে শিশুদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার দায়ে মাইলস্টোনের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। মাইলস্টোনসহ সারাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। নিহত পরিবারগুলোকে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষের আর্থিক জরিমানা দিতে হবে।
আফিয়ার মা উম্মে তামিমা আরও তিনটি দাবি পাঠ করেন। তিনি বলেন, রানওয়ে এলাকা থেকে মাইলস্টোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নামক কোচিং সেন্টার স্থানান্তর করতে হবে। মাইলস্টোনে কোচিং বাণিজ্যের মূল হোতাদের দ্রুত অপসারণ করে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদানকারী শিক্ষকদের অপসারণ এবং আইনের আওতায় আনতে হবে।
বাকি তিনটি দাবি পাঠ করেন তানভীর আহমেদের বাবা রুবেল মিয়া। তিনি উল্লেখ করেন, ঘটনার প্রকৃত চিত্র জানতে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষকে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ প্রকাশ করতে হবে। জনস্বার্থে রিটকারী আইনজীবীর রিট অনুযায়ী সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের রিট বাস্তবায়ন করতে হবে এবং বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জনহীন এলাকায় স্থানান্তর করার দাবি জানাচ্ছি।
বক্তারা বলেন, সেদিন যদি তাদের ক্লাসের পর কোচিং না করাতো তাহলে এ দুর্ঘটনা ঘটত না। ক্লাসের পর এসব কোচিং-ই শিক্ষার্থীদের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাধ্য করে বাচ্চাদের কোচিং করাতো। মাইলস্টোনে কোচিং বন্ধ করার জন্য এর আগে বহুবার আন্দোলন হয়েছে। ওখানে এমন একটা সিস্টেম, কোচিং করলে বাচ্চাদের আদর করে, ভালো মার্কস দেয়।
তাঁরা আরও বলেন, প্রিন্সিপাল নূরনবী বিমান দুর্ঘটনার দিন বাচ্চাদের জন্য ক্যান্টিন বন্ধ করে দেন, কোনো পরিবহন সেবাও দেননি। প্রিন্সিপালের মেয়ে আমাদের প্রতি অভিযোগ করে বলে, আমাদের নাকি চোখের পানি শেষ হয় না। আমরা টাকার জন্য জোর করে চোখের পানি আনি। আমরা এসব বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই।
ডিএইচবি/এমইউএম