ঢাকা, রবিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

সেনাবাহিনী ন্যায়ের পক্ষে, বিচার আইনি প্রক্রিয়াতেই হবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:৫১, অক্টোবর ১১, ২০২৫
সেনাবাহিনী ন্যায়ের পক্ষে, বিচার আইনি প্রক্রিয়াতেই হবে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সামরিক সদস্যদের বিচারসংক্রান্ত বিষয়ে কোনো সাংঘর্ষিক অবস্থান নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আর্মি সবসময় ন্যায়ের পক্ষে থাকবে।

বিচার আইনি প্রক্রিয়াতেই হবে।

শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের মেসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সামরিক সদস্যদের মামলাসংক্রান্ত বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অভিযুক্তদের বিচার সামরিক আইনে হবে নাকি আইসিটি আইনে— এ বিষয়ে কোনো সাংঘর্ষিক অবস্থান আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইসিটি আইন বনাম সেনা আইন; এটা না বলাই ভালো, মুখোমুখি বিষয়টি করা ঠিক হবে না। আইসিটি আইনে বলা আছে, অভিযোগপত্রে নাম উঠলে চাকরি চলে যাবে। কিন্তু মূল প্রশ্ন হলো, অভিযুক্ত কি আসলেই সাজাপ্রাপ্ত? সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পরও তার আপিলের সুযোগ থাকে। আপিল নিষ্পত্তির পর যদি সাজা বহাল থাকে, তখন তাকে সাজাপ্রাপ্ত বলা যাবে। আবার দেখা যাবে, বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কেউ খালাস পেয়ে গেলেন। সে ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের আইনে তিনি আবার তার সার্ভিসে ফিরে যেতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু এই পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তির সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেউ মানসিক চাপে অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন, কেউ হার্ট অ্যাটাক করতে পারেন। এসবও মানবাধিকার ইস্যুর মধ্যে পড়ে।

মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান বলেন, সেনাবাহিনীতে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে। কোনো কর্মকর্তার বিচার চলাকালীন সময়ে তার চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তিনি অবসরে চলে যাবেন। খালাস পেলেও তখন তাকে আর চাকরিতে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই ট্রাইব্যুনালের এই আইনি বিষয় নিয়ে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চাইব।

চার্জশিটে যেসব কর্মকর্তার নাম এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে সেনা আইনে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুম-সংক্রান্ত বিষয়ে একটি জাতীয় কমিশন কাজ করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সেই কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে এবং করছে। আমরা আলাদা করে কোনো কমিশন করিনি। বাংলাদেশ আর্মি ন্যায়ের প্রতি অটল। যা ন্যায়সঙ্গত হবে, আমরা সেটির পক্ষেই থাকব।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুম কমিশনের প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। আমাদের কিছু কর্মকর্তা হয়তো তখন র‍্যাবে ছিলেন, কেউ হয়তো ডিজিএফআইয়ে ছিলেন; কিন্তু তারা তখন আর্মির অধীনে ছিলেন না। র‍্যাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে, আর্মি সদর দপ্তরের অধীনে নয়। ডিজিএফআই সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের অধীনে কাজ করে, কখনোই আর্মির অধীনে নয়। যেহেতু তারা আমাদের সদস্য, তাই তারা আমাদের হেফাজতে থাকতে পারেন। অভিযোগপত্র আমাদের কাছে এলে আমরা বুঝতে পারব কে কতটুকু জড়িত।

অভিযুক্তদের আদালতে হাজিরের বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল নির্ধারিত তারিখ দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে যেটা আইনগতভাবে হওয়ার কথা সেটা হবে।

২২ অক্টোবর অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করা সম্ভব হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আইনের ব্যাখ্যা চাইব। ব্যাখ্যা পাওয়ার পর ২২ তারিখের বিষয়ে আইনগতভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অবসরপ্রাপ্ত যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে, তাদের বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু তারা অবসরে গেছেন, পুলিশ চাইলে তাদের গ্রেপ্তার করতে পারে। আমরা শুধু বলেছি, যদি তারা আমাদের হেফাজতে আসতে চান, তাহলে সেটিও সম্ভব। তবে মনে রাখতে হবে, অবসরপ্রাপ্তরা আর সরাসরি সেনা সদর দপ্তরের অধীনে নন।

এমএমআই/এমজে

এমএমআই/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।