সবার জন্য বাসস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে মাগুরার শালিখা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে।
মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, “গুচ্ছগ্রাম (সিভিআরপি) অর্থাৎ সবার জন্য বাসস্থানের সুযোগ সৃষ্টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প।
“প্রকল্পের অধীন মাটির কাজের জন্য কাবিখা কর্মসূচির আওতায় খাদ্যশস্য মোট বরাদ্দে ৩৬.৬৬৯ মে.টন চালের মধ্যে ২৭.৫০২ মে.টন চাল উপবরাদ্দ দেওয়া হয়, যার মধ্যে অদ্যবধি মাত্র ১৪ মেট্রিকটন চাল ছাড়করণ হয়েছে। ইতোমধ্যে মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে কিছুটা কালক্ষেপণ হলেও নির্মাণসামগ্রী ক্রয়পূর্বক নির্মাণকাজ দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করা হয়েছে। এমতাবস্থায় আনুসঙ্গিক কাজের জন্য দ্রুত মাটির কাজ কম্পন্ন করা প্রয়োজন। ”
চিঠিতে আরো বলা হয়, “কিন্তু মিরাজ হোসেন খান প্রথম থেকেই মাটির কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে অসহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব প্রদর্শন করতে থাকেন মর্মে ওই উপজেলা নির্বাহী অফিসার অবহিত করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, বার বার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও অবশিষ্ট চালের বরাদ্দ ছাড়করণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করে যাচ্ছেন। ”
“এ কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পোড়াগাছি গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে সমাপ্ত করো সম্ভব হচ্ছে না। ”
চিঠিতে বলা হয়, “পোড়াগাছি গুচ্ছগ্রামের বরাদ্দ বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রাপ্ত। কাজের দীর্ঘসূত্রিতা হলে পোড়াগাছি মৌজাতেও মামলা সংক্রান্ত জটিলতার উদ্ভব হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
অপরদিকে, পোড়াগাছি গুচ্ছগ্রাম নির্মাণপূর্বক দ্রুত সমাপনী প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য জাতীয় প্রকল্প পরিচালকের অফিস হতে একাধিকবার তাগিদ পাওয়া সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কোন পরামর্শ বা নির্দেশনায় কর্ণপাত না করে গুচ্ছগ্রামের মত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করেছেন। ”
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, “সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ২০১৬-১৭ অরর্থবছরে গ্রামীণ কাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় ২৫টি ওভারলেপিং প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অপকৌশলে লিপ্ত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার হস্তক্ষেপে তিনি উল্লিখিত প্রকল্পের ২১ লাখ ৭৪ হাজার ৬১১ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে বাধ্য হয়েছেন। ”
“এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উল্লিখিত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একজন অসৎ, দায়িত্বহীন এবং দুর্নীতিপরায়ন কর্মকর্তা। এসমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্হতার অসহযোগিতা ও দুর্নীতিমূলক কার্যকলাপের কারণে সরকারি অতিগুরুত্বপূর্ণ কাজ বাস্তবায়নে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে এবং পোড়াগাছি গুচ্ছগ্রামের নির্মাণকাজ সঠিক সময়ে সম্পন্নের জন্য সমাপনী প্রতিবেদন দাখিল বিলম্বিত হচ্ছে। ”
চিঠিতে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে বলা হয়, “বিষয়টি বিবেচনা করে পোড়াগাছি গুচ্ছগ্রামের নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পাদনের স্বার্থে তার স্থলে একজন সৎ ও দক্ষ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পদায়ন এবং উল্লিখিত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। ”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, ভূমি সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ও গুচ্ছগ্রাম (দ্বিতীয় পর্যায়) এর জাতীয় প্রকল্প পরিচালককেও সম্প্রতি চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৮
এমআইএইচ/এমজেএফ