প্রতিদিনের মতই সেদিনও মা নাবিলা ফারহিন (অফিসিয়াল নাম শারমিন আক্তার) কাজে বের হন। বাসায় এসে আদর করে বুকে টেনে নিবেন, সেই আশাতেই হয়তো অপেক্ষা করছিল হিয়া।
গত ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলার প্লেনে কেবিন ক্রু হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন নাবিলা। আর ওই দুর্ঘটনায় নাবিলাসহ না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ২৬ বাংলাদেশি।
বুধবার (০৪ এপ্রিল) হিয়ার ফুফা স্বপন বাংলানিউজকে বলেন, হিয়া মাঝে-মধ্যেই তার মাকে খোঁজে। তখন আমরা মা অফিসে গেছে বলে স্বান্তনা দেই। সে তো ছোট মানুষ, কিছু বুঝে না-মা একটু পর আসবে বলে অন্যদিকে মনযোগ ফিরিয়ে দেই। তারপর সে আবার খেলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর ১৫ মার্চ হিয়ার বাবা (ইমাম হাসান) দুবাই থেকে দেশে ফিরে আসেন। বাবাকে পেয়ে সে মোটামুটি ভালোই আছে। সারাক্ষণ সে তার বাবার সঙ্গে খেলাধূলা করে। তাকে নিয়ে তারা বাবা ঘোরা-ফেরা, খাওয়া-দাওয়া এবং ঘুমায়। এখন সবকিছুতেই বাবা।
হিয়ার দাদি বিবি হাজেরা বলেন, হিয়ার জন্মের পর আমাদের বাসাতেই থাকতো। বাবা বিদেশে যাওয়ার পর মাস খানেক ধরে মায়ের সঙ্গে উত্তরার বাসায় ছিলো। ও তো কিছু বোঝেনা, তাই মাঝে-মধ্যে মায়ের কথা বলে এমনিতে ভালোই আছে।
তিনি বলেন, মেয়ের মাধ্যমে নেপালে প্লেন বিধ্বস্তের খবর পান। এরপর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের অফিসে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হন তিনি। তারপর উত্তরায় নাবিলার বাসায় গিয়ে দেখেন বাসায় তালা দেওয়া। হিয়াকে গৃহকর্মী রুনার কাছে রেখেই ফ্লাইটে যেতেন নাবিলা। তারপর নাতনি হিয়াকে অপহরণ করা হয়েছে- এমন অভিযোগ এনে রাতেই উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর-৯০২) করেন তিনি।
এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাসার গৃহকর্মী রুনাকে আটক করে। রুনা দাবি করেন, তিনি হিয়াকে অপহরণ করেননি। এরপর গৃহকর্মীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পরদিন দুপুরে মিরপুরের ভাষানটেক এলাকায় নানির বাড়ি থেকে হিয়াকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নানী ও দাদির সমঝোতায় হিয়াকে দাদি বিবি হাজেরার কাছে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৩২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৮
পিএম/আরএ