১৮৮২ সালে তৎকালীন লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার রিভার থমসন থিয়েটার হল হিসেবে এটি নির্মাণ করেছিলেন। কালের আবর্তে মানুষের কাছে যা থমসন হল হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।
এ অবস্থায় বগুড়া সংস্কৃতিমনাসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ ঐতিহ্যবাহী থমসন হল সংস্কার করে সংরক্ষণ এবং সরকারি উদ্যোগে জেলা প্রশাসনের কাছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রূপ দেওয়ার দাবি তোলেন। এমনকি সেই দাবি বাস্তবায়নে সম্প্রতি তারা মানববন্ধন ও সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামার প্রস্ততিও নেন।
কিন্তু আন্দোলনে নামার আগেই জেলা প্রশাসনের প্রধান কর্মকর্তা বগুড়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী বিষয়টি নিয়ে সংস্কৃতিমনাসহ নানা শ্রেণির পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বসেন। সভায় ঐতিহ্যবাহী সেই থমসন হলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর স্থাপনের আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।
বুধবার (০৪ এপ্রিল) সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য ওঠে আসে।
সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জেএম রউফ বাংলানিউজকে জানান, মঙ্গলবার (০৩ এপ্রিল) ঐতিহ্যবাহী থমসন হল সংস্কার করে সরকারি উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর রূপান্তরের দাবিতে বগুড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ কয়েকটি সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন বুধবার (০৪ এপ্রিল) মানববন্ধন ও সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে।
এই দাবির বিষয়ে গৃহীত কর্মসূচি জেলা প্রশাসক মহোদয় জানতে পারেন। পাশাপাশি তিনি দাবি পুরণের আশ্বাস দিয়ে তাদের সঙ্গে বসতে চান। তাই কর্মসূচি স্থগিত করে বুধবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বিষয়টি নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জেলা প্রশাসক, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও সাংবাদিক নেতারা ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, হলটি জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে অবস্থিত। হল ও স্কুল দু’টোই বগুড়ার ঐতিহ্য। এ কারণে কোনো বিরোধ তৈরি করা যাবে না। জিলা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই থমসন হলের সংস্কার সংরক্ষণ ও জাদুঘর স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণ করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করাও গুরুত্বপূর্ণ। নতুন প্রজন্মের সামনে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরতে সরকারের পাশাপাশি সমাজের সচেতন নাগরিকদেরও ভূমিকা রাখতে হবে।
বৈঠকে জেলা প্রশাসক ছাড়াও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আব্দুস সামাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিরুল ইসলাম, বগুড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য শংকর, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়না, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতি জোট নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন মিন্টু, সদস্য খলিলুর রহমান চৌধুরী, বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জেএম রউফ, সম্মিলিতি সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবিএম জিয়াউল হক বাবলা, সাদেকুর রহমান সুজন, আবু সাঈদ সিদ্দিকী, সাবেক সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান মিঠু, আবদুল্লাহেল কাফী তারা, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির, গৌতম চন্দ্র দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব জুয়েল, বগুড়া টিভি জার্নালিস্ট ইউনিটির সভাপতি আব্দুর রহিম বগরা, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেরুল সুজন, টিম ক্রাকড’র সংগঠক আহসানুল কবির ডালিমসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৩১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৮
এমবিএইচ/আরএ