আগামীর সোনালি স্বপ্নে বিভোর ছিল আম চাষিরা। কিন্তু প্রকৃতির বিমুখতায় কপালে যেন চিন্তার ভাঁজ পড়েছে আম চাষিদের।
সোমবার (২ এপ্রিল) সকালে বদরগঞ্জ উপজেলার আম বাগান সরেজমিনে দেখা যায় মুকুলের পেট চিড়ে বের হওয়া আমের গুটি। চিরচেনা সেই অপূর্ব নৈসর্গিক দৃশ্য যে কারো মনকে নাড়া দেবে। আম চাষিরা তাদের সোনালি স্বপ্নের কথা ভেবে আম বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আম চাষিদের মনে যেন আনন্দের পরিবর্তে কপালে চিন্তার ভাঁজ। মনের দুশ্চিন্তা তাদের যেন তাড়া করেছে।
বদরগঞ্জ উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়নের আম বাগানের মালিক মাহাফুজ ওয়াহিদ চয়ন বলেন, শুরুতে আমের প্রচুর মুকুল এসেছিল। অনেক পরিশ্রম এবং পরিচর্যা করে আমের গুটিতে ভরে গেছে আমের বাগান। এখন চিন্তা হচ্ছে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে সর্বশান্ত হয়ে যাবো।
তিনি আরও বলেন, সব কিছু যদি অনুকূলে থাকে তাহলে গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ আম বিক্রি করতে পারবো। ১০ বিঘা জমিতে আমের বাগান করেছি। এতে প্রায় পাঁচ শত আম গাছ আছে। গত বছর আম বাগান পরিচর্যা বাবদ খরচ হয়েছিল প্রায় ২ লাখ টাকা। বিক্রি করেছিলাম ১০ লাখ টাকা। আশা করছি এবার তা বেড়ে দ্বিগুণ হবে।
উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের কিসমত ঘাটাবিল ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের আম বাগান মালিক হাসান আল মাহামুদ বলেন, আমার আম বাগানে হাড়িভাঙা জাতের প্রায় ৪ হাজার আম গাছ আছে। এবার গাছে যে পরিমাণ মুকুল এসেছে তাতে আবহাওয়া যদি বৈরী না হয় তাহলে গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ আম বিক্রি করতে পারবো।
তিনি আরও জানান, গত কয়েকদিনের ঝড় আর শিলা বৃষ্টি আমার চিন্তার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। যদি আবারও আবহাওয়া বিরুপ হয় তাহলে আমি সর্বশান্ত হয়ে
যাবো।
বদরগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কনক রায় বাংলানিউজকে জানান, এ উপজেলায় হাড়িভাঙ্গা জাতের আম বাগান রয়েছে ৩৯৫ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের তুলনায় বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মাহাবুবর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বদরগঞ্জ উপজেলায় হাড়িভাঙা জাতের আম বাগানই রয়েছে বেশি। গত বছরের তুলনায় এবার আমের বাগান গুলোতে পর্যাপ্ত মুকুল এসেছে। যদি আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত অনুকূলে থাকে তবে আম চাষিরা লাভবান হবেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৮
আরআইএস/