মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) হাজারীবাগের নবাবগঞ্জ বাজারের স্লুইসগেট এলাকায় দাঁড়িয়ে কথা হয় দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে। বাজার ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করছেন গিয়াসউদ্দিন।
নবাবগঞ্জ বাজারে এই মোবাইল চা বিক্রেতা বলেন, “কত মন্ত্রী-এমপি আইলো। উচ্ছেদের কথা কইলো, কিন্তু উচ্ছেদ তো হয় না, শুধু শুনি উচ্ছেদ হবে। দেহা যাক এই বার কী অয়। ”
দেলোয়ার হোসেন বলেন, “এই খালে সাঁতার কেটেছি, মাছ ধরেছি। স্বচ্ছ পানি ছিল, এখন হয়েছে ময়লার ভাগাড়। অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই খালে, মনটা বড় আনচান করে, খুব খারাপ লাগে বাল্যকালে স্মৃতি মনে হয়। ”

স্থানীয় লোকজন জানান, নবাবগঞ্জ বাজারের স্লুইসগেট এলাকায় এই খালটি বুড়িগঙ্গার সঙ্গে মিলেছে। এক সময় এটি বুড়িগঙ্গা নদীরই অংশ ছিল। নদীর মাঝে চর পড়ার পর মানুষ পাড় ঘেঁষে বসতি স্থাপন করে। পরে তা খালে পরিণত হয়। চরটা হলো কামরাঙ্গীরচর, সেই চরেও গড়ে ওঠে বসতি।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, “বাল্যকালে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই খালে সাথে। সেই স্মৃতি খুঁজে বেড়াই। দেখতে পাই চরের মধ্যে বসতি গড়ে ওঠেছে। বসতি এলাকা ঘিরেই জমেছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। এছাড়া ময়লা ফেলায় পানি দূষিত হওয়ার পর থেকেই আর মাছ পাওয়া যায় না। ”
স্থানীয় লোকজন জানান, তারা ছোটবেলায় দেখেছেন মানুষ গোসল করত, নৌকা চলত, মাছ ধরত। এখন আর নদীর সেই আগের চেহারা নাই। নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।

ব্যবসায়ী আলমগীর বলেন, “এখানে যে দোকানগুলো দেখছেন তা সবই অস্থায়ী। এই জায়গা সরকারি। কয়েকদিনের মধ্যেই উচ্ছেদ করা হবে বলে লোকমুখে শুনেছি। ”
তিনি বলেন, “সরকারি জায়গা তাই নোটিশ পেলেই আমরা চলে যাবো। আর এখানে দুর্গন্ধ ও ময়লার কারণে বসতেও খুব সমস্যা হয়। তাই আমরাও চাই খালটি সংস্কার করা হোক। ”
গত ২২ জানুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাইদ খোকন রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল, বক্স-কালভার্ট ও রাস্তা অবৈধ দখলমুক্ত করার ঘোষণা দেন। প্রাথমিকভাবে আগামী ৬ এবং ৯ ফেব্রুয়ারি নন্দীপাড়া-ত্রিমোহিনী খাল এবং হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ এলাকার রাস্তা অবৈধ দখলমুক্তির জন্য অভিযান চালানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৭
আরএটি/এইচএ/