ঢাকা, সোমবার, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

অজানা রোগে উৎকণ্ঠায় খাসিয়া পানচাষিরা (ভিডিও)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:১৩, অক্টোবর ২৫, ২০১৬
অজানা রোগে উৎকণ্ঠায় খাসিয়া পানচাষিরা (ভিডিও) ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাহুবল (হবিগঞ্জ) থেকে ফিরে: ‘চা-কন্যা’ ভাস্কর্যের পাশ্ববর্তী পথ ধরে কিছুদূর এগিয়ে গেলেই আলিয়াছড়া খাসিয়াপুঞ্জি। পাহাড়ি প্রকৃতির সুউচ্চ সীমানার মাঝে এ নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর আবাসন।

রোদের উত্তাপ বেড়েই চলেছে ক্রমশ। সময় গড়াচ্ছে দুপুরের দিকে।

বন-জঙ্গল আর টিলা ভাজে ভাজে দীর্ঘ গাছের গাঁ ঘেঁষে লেপ্টে থাকা উদ্ভিদটির নাম খাসিয়াপান। যা নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর গৌরব, ঐতিহ্য আর অর্থনীতির উন্নয়নের একমাত্র অবলম্বন। এ জমিটুকুতে পান চাষ করে বেঁচে আছেন তারা।   

আমাদের জিপ গাড়ির গতিময়তা তখন পাহাড় ঘেঁষা আকা-বাঁকা পথের দিকে। টিলাগুলোতে গাড়ির চাকা উঠছে আর নামছে। প্রথমে পাকা সড়ক তারপর মাটির পথ।  

গাড়িতে রয়েছেন টি-হ্যাভেন রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবু সিদ্দিক মো. মুসা এবং বাংলানিউজের সিনিয়র ফটো সাংবাদিক নূর-এ আলম নূর।  

আলিয়াছড়া পুঞ্জির মূলফটকের পাশে আমাদের অপেক্ষায় দাঁড়ানো পুঞ্জিপ্রধান (হেডম্যান) উটিয়ান তংপেয়ার। তিনি এ এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ অধিকর্তা। সহাস্যে তিনি স্বাগত জানালেন আগন্তক অতিথিদের।  

কথা প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে এই পুঞ্জিপ্রধান বলেন, অজানা এক রোগ আমাদের পানগাছগুলোকে নষ্ট করে দিচ্ছে। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। পানের তলা পচে যায়। তারপর একসময় পুরো গাছটি মরে যায়।  

‘কিন্তু পানগাছের এ রোগের নাম আমরা জানি না। ’ 

তিনি বলেন, গোড়া পচন রোগ ছাড়াও পানের আরেকটি রোগ হলো পানের ডগা হলুদ হয়ে পান নষ্ট হয়ে যাওয়া। খাসিয়া ভাষায় একে আমরা ‘উৎরাম রোগ’ বলে থাকি।  

‘আমরা সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি- যাতে আমাদের পানের এই অজানাটি রোগটিকে নির্মূলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ’ 

নিজেদের আবাসন প্রসঙ্গে উটিয়ান তংপেয়ার বলেন, এ পুঞ্জিতে ১২৫টি পারিবার রয়েছে। সবারই প্রধান পেশা পান চাষ। এ পুঞ্জিতে প্রায় ৫৯০ একর জমি আছে।  

জনপ্রতি তিন একর করে জায়গা নিয়ে পান চাষ করেন তারা।  

খাসিয়া পান সম্পর্কে স্থানীয় মধ্যবয়েসী নারী মানার তংপেয়ার বলেন, ১২টা পানে ১ ছলি। ১২ ছলিতে ১ কান্তা। ২০ কান্তায় ১ কুড়ি। একজন কামলা (শ্রমিক) প্রতিদিন গড়ে দুই কুড়ি বা ২ হাজার ৮৮০টি পান তুলতে পারেন।  

‘১ কুড়ি পানের দাম পড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। ’ 

তিনি বলেন, বর্ষার সময় খাসিয়া পানের উৎপাদন বেশি হয়। বৃষ্টি পড়লেই গাছ বেশি বেশি পাতা ছাড়ে। কিন্তু শীতের গাছ পাতা ছাড়ে না। তখন উৎপাদন কম হয় আর দামও বেশি থাকে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৬ 
বিবিবি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।