ঢাকা, শনিবার, ২ কার্তিক ১৪৩২, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে বসে সনদ করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৫৮, অক্টোবর ১৭, ২০২৫
নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে বসে সনদ করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ঢাকা: ঐক্যের সুর নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনের দিকে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই নির্বাচন কীভাবে করা হবে, সেজন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের বসে একটি সনদ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক সনদ স্বাক্ষরের পর দেওয়া বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ যে সনদ স্বাক্ষর করা হলো, এটা থেকে বহু দেশ শিখতে আসবে—এটা আমি গ্যারান্টি দিয়ে আপনাদের বলে রাখলাম। একটা উদাহরণ সৃষ্টি করলেন, এরকম বহু উদাহরণ আরও সৃষ্টি করতে পারবেন-সেই পথে যেন আমরা যাই। আমরা নির্বাচনের কথা বলেছি। এই সুর-যে সুর আমরা আজকে এখানে বাজালাম-সেই সুর নিয়ে আমরা নির্বাচনের দিকে যাব। ঐক্যের সুর, ঐক্যের সুর নিয়ে নির্বাচনের দিকে যাব। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে এবং এই ঐক্য যেন বজায় থাকে। আজকে ঐক্যমতের মতো আমরা যেমন সনদ করলাম, নির্বাচনের ব্যাপারেও আপনারা রাজনৈতিক নেতারা বসে, বিভিন্ন দলের নেতারা বসে একটা সনদ করেন—কীভাবে নির্বাচন করবেন।  

তিনি বলেন, যেমন তেমন করে নির্বাচন করলে তো আবার পুরনো জায়গায় ফিরে যাওয়া-কিন্তু লাভটা কী হলো? একথা লিখে লাভ কী হলো, কথা লিখলাম কথা মানলাম না, কাজের মধ্যে গিয়ে মানলাম না। কাজেই আমার অনুরোধ, আপনারা আবার ঐকমত্য কমিশন বলুন, কমিটি বলুন-নিজেরা বসুন, নির্বাচনটা কীভাবে সুন্দরভাবে করবেন, উৎসবমুখর করে করবেন, ইতিহাসের স্মরণীয় করে করবেন—যে সনদ রচয়িতা এই নির্বাচন করেছে, এই সনদ তৈরি করেছে, তাদের হাতেই এই নির্বাচন সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ এসে কেন সেখানে ধাক্কাধাক্কি করবে? নিজেদের নির্বাচন নিজেরা করব আমরা। কারো এসে আমাদের সোজা করতে হবে না, আমাদেরকে দেখিয়ে দিতে হবে না, ধাক্কাধাক্কি করতে হবে না। আমরা কি জানি না কীভাবে নির্বাচন সুন্দরভাবে করতে হয়? সেটা যেন একটা উদাহরণ হয়। সেটা জাতির জন্য উদাহরণ, বিশ্বের জন্য একটা উদাহরণ হিসেবে আমরা সে নির্বাচনটা করতে চাই। আমরা ইনশাআল্লাহ পারব, আজকে সেই পাড়ার একটা চিহ্ন আমরা এখানে রেখে গেলাম। এই চিহ্নটা ধরে আমরা পথে অগ্রসর হব। আল্লাহ আমাদের সেই সামর্থ্য দিন। যারা আজকে শুনছেন, দূরে দূরে আছেন, মন ঠিক করুন—এই যে ঐকমত্যের মাধ্যমে যে কঠিন কঠিন কাজ সমাধা করা যায়, আমরা যে বর্বরতা থেকে সভ্যতায় এসেছি তার প্রমাণ রাখা যায়, কাগজে আমরা প্রমাণ করলাম—সে সভ্যতায় আমরা নিয়ে আসলাম। এখন কাজে প্রমাণ করতে হবে যে আমরা সেই সভ্যতা অর্জন করেছি।  

তিনি বলেন, আমাদের রাজনৈতিক নেতারা সেই পথ দেখিয়েছেন। আমরা তাদের কাছে মাথা নত করছি যে তারা আমাদের এই পথ দেখানোর জন্য। পরবর্তীতেও তারা যেন সুন্দরভাবে করেন, নির্বাচনটাও সেরকম যেন আমরা বাহবা দিতে পারি। সবাই মিলে এমনভাবে নির্বাচন করব—দুনিয়ার কেউ এসে বলতে পারবে না যে এখানে ঘাটতি আছে, এখানে গোলমাল হয়েছে—এ কথা যেন কেউ এসে বলতে না পারে। বাইরের লোক কেন এসে আমাদের বলবে তোমরা এটা ঠিক করো নাই, ওটা ঠিক করো নাই? আমরা কি জাতি হলাম যে বাইরের কথার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে? আমরা যারা এই সনদ তৈরি করতে পারি, সেই ক্ষমতা কি দুনিয়ার কারো থেকে কম মনে হয়েছে আপনাদের কাছে? এই আলোচনা কি কারো কাছে কম মনে হয়েছে আপনাদের কাছে? যে রাজনীতিবিদরা এখানে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের বিদ্যা, তাদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা অন্য দেশের কোনো রাজনীতিকের থেকে কম মনে হয়েছে আপনাদের কাছে? মোটেই মনে হয়নি। তাহলে কেন আমরা এটা পারব না? আপনারা দোয়া করুন—সবাই মিলে যাতে আমরা নির্বাচনটাকে সুন্দরভাবে করতে পারি।

এসকে/এসআইএস
 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।