ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ ভাদ্র ১৪৩২, ২৬ আগস্ট ২০২৫, ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

বিচার বিলম্বিত ও ব্যয়বহুল হলে আইনও অসম্মানিত হয়: প্রধান বিচারপতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:৩২, আগস্ট ২৬, ২০২৫
বিচার বিলম্বিত ও ব্যয়বহুল হলে আইনও অসম্মানিত হয়: প্রধান বিচারপতি ন্যাশনাল কনফারেন্স অন এডিআর অনুষ্ঠানে

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, বিচার যদি বিলম্বিত ও ব্যয়বহুল হয়, তবে আইনও অসম্মানিত হয়। এতে ব্যবস্থাটিও সম্মান হারায়।

তাই তিনি বিচারপ্রার্থীদের জন্য আইনি সহায়তা আরও বিস্তৃত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স অন এডিআর: রোল অব ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল এইড কমিটিস ইন ইমপ্লিমেন্টিং নিউ লেজিসলেশন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

প্রধান বিচারপতি বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থান আমাদের শিখিয়েছে ‘বৈধতা’ আসে আস্থা থেকে, কোনো পদবি বা ডিগ্রি থেকে নয়। বিচার বিভাগ কেবল তখনই আস্থা অর্জন করবে, যদি সেটি স্বাধীন, দক্ষ ও সহানুভূতিশীল হিসেবে প্রতীয়মান হয়। স্বাধীনতা মানে হচ্ছে বাজেট ও প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসনে নির্বাহী হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকা। ”

তিনি আরও বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের ফলে যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছে, তা আমাদের সবাইকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে বিশেষ করে বিচারপ্রার্থীদের সেবা কীভাবে মানবিক, দ্রুত ও সাশ্রয়ী করা যায়। ”

বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) প্রসঙ্গে তিনি জানান, দরিদ্র নারী ভরণপোষণ পেতে, শ্রমিক মজুরি ফেরত পেতে কিংবা জমি হারানো কৃষক আইনের দ্বারস্থ হন। যদি সেই প্রক্রিয়াটি সহজ ও সাশ্রয়ী হয়, তবে আইনের মর্যাদা বাড়ে।

প্রধান বিচারপতি জানান, বিচার বিভাগ ইতোমধ্যেই নানা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। লিগ্যাল এইড অফিসগুলো থেকে আইনি সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে তার দপ্তর থেকে গত বছর জারি করা বিজ্ঞপ্তির কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আসিফ নজরুল বলেন, “মামলার দীর্ঘসূত্রিতা মানেই একেকজন মানুষের সর্বনাশ। আমাদের বিচারব্যবস্থা সংস্কারে কয়েক হাজার কোটি টাকা লাগবে। তবে কার্যকর লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে অনেক কম খরচে অসংখ্য মানুষকে ন্যায়বিচার দেওয়া সম্ভব। ”

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আজাদ সুবহানী জানান, মামলা হওয়ার আগে ৮৯ শতাংশ এবং মামলা দায়েরের পর ৯৩.৪২ শতাংশ বিরোধ লিগ্যাল এইড অফিসগুলোর মাধ্যমে সফলভাবে মীমাংসা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই সেবা আরও সম্প্রসারিত হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ আবু তাহের প্রমুখ।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।