জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদের ত্যাগকে স্মরণ রেখে এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে যেখানে মানুষের অধিকার কখনো ক্ষুণ্ন হবে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বহু তরুণ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছেন।
শনিবার (১৬ আগস্ট) ঢাকা সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুলে নবনির্মিত ৬ তলা একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন ও এসএসসি ২০২৫ সালের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
ফরিদা আখতার বলেন, বেগম রোকেয়া মুসলিম মেয়েদের জন্য স্বাধীন পরিবেশ দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন, যেখানে পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালিত হতো। কেবল বই পড়া দিয়ে সবকিছু জানা সম্ভব নয়, কারণ ইতিহাস বারবার বিকৃত হয়েছে। তাই শিক্ষকদের দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের প্রকৃত শিক্ষা দিয়ে দেশ ও জাতি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা।
নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, স্কুলের ভেতরে ও বাইরে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব নিতে হবে। ইভটিজিংয়ের কারণে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে— নতুন বাংলাদেশে তা হতে দেওয়া যাবে না।
পরিবেশ সুরক্ষায় শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সপ্তাহে অন্তত একদিন স্কুল ও এলাকায় পরিবেশ রক্ষায় কার্যক্রম চালাতে হবে। পাশাপাশি পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে, কারণ এগুলো মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
পুষ্টি নিরাপত্তা প্রসঙ্গে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে দেশে মাথাপিছু গড় মাংস খেতে পারে মাত্র ২০০ গ্রাম। এখনও বহু পরিবার আছে যারা সপ্তাহে বা মাসে একদিন মাংস খায়। দৈনিক প্রায় ৬ কোটি ডিম উৎপাদন হলেও তা দিয়ে চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তুলনামূলক ভালো অবস্থানে আছে। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম আমাদের পুষ্টির উৎস। তাই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি পুষ্টির দিকটিও বিবেচনায় রাখতে হবে।
নারী শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী ও আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, নারী নির্যাতন আইন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে শিক্ষক, অভিভাবক ও সমাজকে একসঙ্গে সচেতন হতে হবে।
বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হামিদুর রহমান হামিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. ওয়ারেছ আনসারী ও ঢাকা মেট্রোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মেনহাজুল হক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অত্র বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক নুরজাহান বেগম। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন নওশাবা ইসলাম। এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে উপদেষ্টা কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে সংবর্ধনা স্মারক তুলে দেন এবং নতুন ৬ তলা ভবনের উদ্বোধন করেন।
জিসিজি/আরবি