ঢাকা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নেতৃত্বে গত এক বছরে বন, বন্যপ্রাণী, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নেওয়া হয়েছে একের পর এক পদক্ষেপ।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বনের জমিতে সরকারি প্রকল্প স্থাপনের পুরোনো সিদ্ধান্ত বাতিলের ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারের ৭০০ একর জমি এবং বাফুফের জন্য নির্ধারিত ২০ একর সংরক্ষিত বনভূমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। সোনাদিয়ার ৯ হাজার ৪৬৭ একর জমি এবং জাফর আলম ক্যাডেট কলেজের নামে বন্দোবস্তকৃত ১৫৫.৭০ একর জমিও ফেরত আনা হয়েছে। আগস্ট ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত ৫ হাজার ৯৩ একর বনভূমি উদ্ধার করে সেখানে পুনরায় বনায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।
এতে আরও জানানো হয়, চুনতি বন পুনরুদ্ধার প্রকল্পের আওতায় ৩৭ হাজার ১৮২ একর জমি থেকে আকাশমণি গাছ সরিয়ে প্রাকৃতিক বন ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। মধুপুর ও শেরপুরেও আকাশমণি গাছ সরিয়ে বনকে প্রাকৃতিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে হাতির করিডোর পুনরায় কার্যকর হয়।
বিলুপ্তপ্রায় দেশি ময়ূর ফিরিয়ে আনাসহ সাম্বার, কালোমুখ প্যারা পাখি, উল্লুক ও হাতির সুরক্ষায় নেওয়া হয়েছে কার্যকর উদ্যোগ। মানুষের সঙ্গে হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর দ্বন্দ্ব নিরসনে ১৫৯টি ইআরটি গঠন করা হয়েছে এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। মৌলভীবাজারের লাঠিটিলা সাফারি পার্ক প্রকল্প বাতিল এবং বন্দি হাতি সংরক্ষণের জন্য অভয়ারণ্য গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
রাজশাহীর বিল জোয়ানা ও বিল ভেলাসহ কয়েকটি জলাভূমিকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে এবং অন্যান্য এলাকাতেও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের উদ্যোগ চলছে।
জনদাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্যালিপটাস ও একাশিয়া গাছের চারা উৎপাদন, বিপণন ও রোপণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং নার্সারির এসব গাছ ধ্বংস করা হয়েছে।
পরিবেশ ও জলবায়ু সংরক্ষণের লক্ষ্যে নেওয়া অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে- ঢাকার শপিং মলগুলোতে নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করা এবং কাঁচাবাজারে অভিযান জোরদার করা। বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ সহজলভ্য করতে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়ে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ‘ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান’ প্রণয়ন এবং ৮৩০টি অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ৩৫১ কোটি টাকার ৪১টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’ চূড়ান্ত করা হয়েছে। পরিবেশ ও বন রক্ষায় ৮টি আইন, বিধিমালা ও নির্দেশিকা চূড়ান্ত করার কাজ চলমান রয়েছে।
এসকে/এসআইএস