ঢাকা: সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিয়ে হাওর মাস্টারপ্ল্যান বা মহাপরিকল্পনা হালনাগাদকরণ চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
চূড়ান্ত করার আগে তা ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সোমবার (৩০ জুন) পানি ভবনের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর ‘হাওর মহাপরিকল্পনা মূল্যায়ন ও হালনাগাদকরণের জন্য সমন্বিত সমীক্ষা’ শীর্ষক প্রকল্পের ফলাফলের ওপর জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পানি সম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ওয়েবসাইটে দেওয়ার পরে আজকে যারা এখানে কর্মশালায় আসতে পারেননি কিন্তু যারা প্রকৃতি নিয়ে ভাবেন, পরিবেশ নিয়ে ভাবেন তাদেরকে আমরা জানাবো। স্থানীয়সহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামত পাওয়ার পরে হাওরের মহাপরিকল্পনা হালনাগাদকরণের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, দেশের ৩৭১টি হাওরের সীমানা নির্ধারণ হওয়া উচিত। হাওরগুলোতে সীমানা চিহ্নিত করে এগুলোকে জলাধার কেন্দ্রিক প্রাণাদার হিসেবে প্রাথমিকভাবে বিবেচনা করা হবে।
তিনি বলেন, এক এক হাওরের আসলে ইকোলজিক্যাল বা পরিবেশগত আবেদন একেক রকম। কোনো কোনো হাওরে প্রচুর মাছ উৎপাদন হয়। আবার কোনো কোনো হাওরের বিস্তীর্ণ এলাকায় শুধু ধান আর ধান চাষ হয়। সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে হাওরের মাস্টারপ্ল্যানটা বা মহাপরিকল্পনাটা আসলে সাধারণ মানুষ যেন বুঝতে পারে সে রকম সহজ করে দিতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর গ্লোবাল হেরিটেজের সম্মান পেয়েছে। হাওরগুলো আমাদেরকে বিশ্ব দরবারে পরিচয় করিয়েছে। আমরা যেমন নদীকে একটা জীবন্ত সত্তা বলি। একইভাবে হাওরও আসলে একটা জীবন্ত সত্তা। হাওর আমাদের একটা নিজস্ব ইকো সিস্টেম।
হাওরের স্থানীয় মানুষজনকে সচেতন হওয়ার তাগিদ দিয়ে রিজওয়ানা বলেন, সাধারণ মানুষ যদি হাওরে তার যে জায়গাটা আছে সেটা শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দেয়, আর তারপরে শিল্প প্রতিষ্ঠান যদি ওখানে একটা ফ্যাক্টরি বা কলকারখানা বানায় তাহলে শিল্পের বর্জ্যটা হাওরের পানিতে ফেলবে আর এতে হাওর দূষিত হয়ে পড়বে এবং হাওরের পরিবেশ-প্রতিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
হাওরবাসীর চিকিৎসার ওপর গুরুত্ব দিয়ে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, হাওরে চিকিৎসার জন্য একটা হসপিটাল বোর্ড করা যায় কি না এটা নিয়ে ভাবছি এবং প্রয়োজনে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড থেকে এ বিষয়ে কিছু করতে পারি কি না সেটা আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে দেখব।
হাওরে বনায়নের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, কমিউনিটিকে সঙ্গে নিয়ে বন বিভাগের মাধ্যমে হাওরে কাজ করবো যেন গাছগুলো তারা দেখভাল করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য রাখেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হাবীবুর রহমান।
অন্যান্যের মধ্যে কর্মশালায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক, আইডব্লিউএমের নির্বাহী পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।
এসকে/এমইউএম