ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২, ৩০ জুন ২০২৫, ০৪ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

সংসদের উচ্চকক্ষে আনুপাতিক হারে আসন বণ্টন চান মান্না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:২২, জুন ২৯, ২০২৫
সংসদের উচ্চকক্ষে আনুপাতিক হারে আসন বণ্টন চান মান্না

ঢাকা: নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আমরা আপার হাউসকে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে চাই, যাতে এটি নিম্নকক্ষের 'প্রতিবিম্ব' না হয় এবং ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় থাকে।

রবিবার (২৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সপ্তম দিনের দ্বিতীয় পর্বের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সংলাপে দুটি প্রধান বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রথমটি ছিল সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি প্রভাবমুক্ত একটি কমিটি গঠন। এই প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য ছিল, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সরকারের হস্তক্ষেপ কমানো এবং নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা। প্রস্তাবিত সাত সদস্যের কমিটি যতটা সম্ভব নিরপেক্ষ রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে, বিএনপি এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেছে যে এটি নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতাকে একেবারে শূন্য করে দেবে।  

মান্না বলেন, আমরা মনে করি এটি সঠিক নয়। নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা কেবল এই জায়গায় কেন সীমাবদ্ধ হবে? তাদের স্বাধীনভাবে দেশ পরিচালনার ক্ষমতা রয়েছে।  

তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত, এই কমিটির নাম 'সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি' রাখার প্রস্তাব করা হয়েছিল, যাতে এটিকে কোনো সুপ্রা বডির মতো মনে না হয়। তবে, এই বিষয়ে আজকেও দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি এবং বিএনপি তাদের আগের অবস্থানেই অনড় আছে।  

মান্না জোর দিয়ে বলেন, যদি আমরা এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখন রক্ষা করতে না পারি, তাহলে গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হবে না।

মান্না জানান, বিএনপির প্রস্তাব হচ্ছে, নিম্নকক্ষ ৩০০ আসনের হবে এবং ভোটিং প্যাটার্ন আগের মতোই থাকবে। উচ্চকক্ষ নিম্নকক্ষের প্রাপ্ত আসন সংখ্যার অনুপাতে গঠিত হবে (যেমন, নিম্নকক্ষে যে দল যে অনুপাতে আসন পাবে, উচ্চকক্ষেও সেই অনুপাতে আসন পাবে)।  

মান্না এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেন, আমরা আপার হাউসকে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে চাই, যাতে এটি নিম্নকক্ষের 'প্রতিবিম্ব' না হয় এবং ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় থাকে।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠিত হলে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল চাইলেই সংবিধান যখন তখন পরিবর্তন করতে পারবে না, বরং অন্যান্য দলের সাথে আলোচনা করতে হবে। নাগরিক ঐক্যের প্রস্তাব হলো, নিম্নকক্ষে সংবিধান সংশোধনের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন হবে, কিন্তু উচ্চকক্ষে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা (৫/৪ অংশ) হলেই চলবে।  

মান্না বলেন, আমরা মনে করি, বিশেষ করে সংবিধান সংশোধন বা যুদ্ধাবস্থার মতো পরিস্থিতিতে একটি দলের ওপর সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব দিলে স্বেচ্ছাচারী শাসনের প্রবণতা তৈরি হয়।

সবশেষে মাহমুদুর মান্না বলেন, এখনো পর্যন্ত কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে আলোচনা চলছে এবং আমরা আবার বসবো। ঐকমত্যের ভিত্তিতেই যাতে আমরা এই পরিবর্তনগুলো করতে পারি, সে চেষ্টাই আমরা করছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগে তো একসাথে বসাই হতো না, এখন বসা হচ্ছে। বেশ কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হচ্ছে এবং অনেক বিষয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়া তৈরি হচ্ছে। আমরা হতাশ নই যে কিছুই হচ্ছে না। আরও অনেক বেশি হতে পারতো, যদি যারা এই পরিচালনা করছেন, তারা ভালো করে বুঝতেন এবং সবার সাথে আগে থেকে বিনিময় করতেন, তাহলে সম্পর্ক আরও সহজ হতো এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া ভালো হতো।

ইএসএস/এমএম 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।