ঢাকা: সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ (২০২৫) পুরোপুরি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিচে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে আন্দোলন চলাকালে তিনি এই কথা জানান।
সচিবালয়ের সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠন করা বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতৃত্বে এই আন্দোলন হচ্ছে।
বিক্ষোভ সমাবেশে ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবির ও মো. নুরুল ইসলাম, কো-মহাসচিব নজরুল ইসলামসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবির বলেন, আজ আমরা স্বরাষ্ট্র ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি জমা দেব। এ অধ্যাদেশ পুরোপুরি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।
এর আগে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের আট বিভাগে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গেছে। আলোচনার নামে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আস্থা ভঙ্গ করেছে। বিশ্বাস নষ্ট করেছে। আমরা চাই আমাদের ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হোক। এ ছাড়া যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলা আছেন তাদের তাড়াতে হবে।
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আজ যেমন আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে এসেছেন, আগামীকালও প্রতিটি মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে আসবেন সবাই। আগামীকালের আন্দোলন আরও দুর্দান্ত হবে।
নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা সরকারি কর্মচারী। আমরা নিয়ম-শৃঙ্খলায় বিশ্বাসী। আগামীদিনে আরও বৃহত্তর আলোচনা আসবে।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে কর্মচারীরা ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, সচিবালয় জেগেছে’, ‘মানি না মানবো না, ফ্যাসিবাদী কালো আইন’, ‘মানি না মানবো না, অবৈধ কালো আইন’, ‘ফ্যাসিবাদের দালালরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ স্লোগান দেন।
উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে এই অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।
অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সর্বশেষ ঈদের ছুটির আগে ৩ জুন পর্যন্ত সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেছেন কর্মচারীরা। চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সরকারের সাতজন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা। ১৫ জুনের মধ্যে চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল না করলে ১৬ জুন থেকে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার হুমকিও দিয়েছিলেন কর্মচারী নেতারা।
এর মধ্যে গত ৪ জুন ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ পর্যালোচনা করে সুপারিশ দিতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটি গত সোমবার বিকেলে প্রথম বৈঠকে বসছে। কমিটির সুপারিশ দেওয়া পর্যন্ত কর্মচারীদের আন্দোলন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা
জিসিজি/আরবি