ঢাকা: ঈদুল আজহার সপ্তম দিনেও রাজধানীতে ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উদযাপন শেষে লঞ্চ, বাস ও ট্রেনে করে রাজধানীতে ফিরছেন নগরবাসী।
শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, উত্তরের বেশিরভাগ মানুষ ট্রেনে করেই ঢাকা ফিরছেন। টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, লালমনিরহাট, সিরাজগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড় ও সিলেটসহ বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিনই কর্মজীবী মানুষ ঢাকায় আসছেন। তবে এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় যাত্রীদের তেমন ভোগান্তি হয়নি বলে জানিয়েছেন অনেক যাত্রী। কোরবানির জন্য অনেকেই আগেভাগে ঢাকা ছেড়েছেন বলে যাত্রাপথে চাপ কম ছিল। রেল কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার কারণেও ট্রেনের তেমন কোনো শিডিউল বিপর্যয় হয়নি বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।
কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বলেন, ঈদ পরবর্তী আমাদের যে কর্মসূচি ছিল তা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সকাল থেকে বেশ কয়েকটি ট্রেন ছেড়ে গেছে। সবই সময়মতো ছেড়ে গেছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, যাতে সময়মতো ট্রেন আসা-যাওয়া নিশ্চিত করা যায়। এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেনি।
তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ এখনও রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা যাত্রীদের বারবার অনুরোধ করছি মাস্ক পরে ট্রেনে ভ্রমণ করার জন্য। ঈদযাত্রার শুরু থেকেই এ সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে। তবে শুক্রবার সকাল থেকে যেসব ট্রেন ঢাকায় এসেছে, তার অধিকাংশ যাত্রীর মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। হাতেগোনা দু-একজন ছাড়া প্রায় সবাই মাস্ক ছাড়া এসেছেন।
সিলেট থেকে আসা যাত্রী মো. সোহেল বাংলানিউজকে জানান, আমি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। পরিবার নিয়ে ঈদের ছুটিতে সিলেট গিয়েছিলাম। যাতায়াতে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। ট্রেনেরও তেমন শিডিউল বিপর্যয় ছিল না। তবে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকা সত্ত্বেও বেশিরভাগ মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবেই মাস্ক পরছেন না।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আরও ১৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে একই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্ক করে বলেছে, এখন থেকে সবাইকে মাস্ক পরে রাজধানীতে প্রবেশ করতে হবে। বিশেষ করে যারা এখনও ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছেন, তাদের জন্য এই নির্দেশনা কঠোরভাবে মানার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে যেসব ট্রেন ছেড়ে গেছে। তিতাস কমিউটার: সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশে, জামালপুর এক্সপ্রেস: সকাল ১০টায় জামালপুরের উদ্দেশে, একতা এক্সপ্রেস: সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস: সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে, রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস (শহরতলী): সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে বেনাপোলের উদ্দেশে, জয়ন্তীকা এক্সপ্রেস: সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে সিলেটের উদ্দেশে, নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস: বেলা ১১টা ২০ মিনিটে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং রেল কর্তৃপক্ষ সবাইকে আবারও অনুরোধ জানিয়েছে—নিজেদের ও অন্যদের নিরাপত্তার জন্য ট্রেনে ভ্রমণের সময় অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
এসএ/আরবি