ঢাকা: ঈদযাত্রায় যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে তা ফেরত ও পরিবহনকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
এবারের ঈদযাত্রায় শতভাগ স্বস্তিদায়ক না হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে খুব একটা বড় ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলেও উপদেষ্টা জানান।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা দুপুর ১২টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে আসেন এবং প্ল্যাটফর্ম ঘুরে দেখেন।
তিনি সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
রেল উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দল, মত, নির্বিশেষে সবার সরকার। যিনি দল করেন তার সরকার, যিনি দল করেন না তারও সরকার। এজন্যই আমরা আসছি আমাদের দায়বোধ থেকে, আমাদের ভাই-বোনরা যাতায়াত করবেন, দূরে যাবেন, গ্রামের বাড়িতে যাবেন, পরিজনের সঙ্গে ঈদ করবেন, এই যাত্রাটা যাতে কষ্টের না হয় সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি। ঈদযাত্রা মানে কয়েকটা জিনিস গুরুত্বপূর্ণ, একটা হচ্ছে সময় মতো ট্রেনটা ছাড়া। আমি খোঁজ নিলাম যে সবগুলো ট্রেনই সময়মতো ছেড়ে গেছে। গতকালের চেয়ে এখানে পরিচ্ছন্নতা অনেক বেড়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আরও দেখছি যে, বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে কি না। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে দুইটা জায়গায় আমরা, আরেকটি জায়গায় সামান্য বেশি ভাড়া নিয়েছে। দুই ক্ষেত্রে আমরা যাত্রীকে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। লাল-সবুজ পরিবহনকে আমাদের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। আমরা আশা করি, সবার সহযোগিতায় যেহেতু এটা সবার সরকার এখন কিন্তু আমরা রেলওয়ে মন্ত্রণালয় বা সড়ক বিভাগের কম হিসেবে আমরা কাজ করি না। আমরা এখন সরকার হিসেবে কাজ করি এবং সরকারের বাইরে যারা বেসরকারি খাতে পরিবহন মালিক শ্রমিক নেতারা, রাজনৈতিক নেতারা সবার সঙ্গে একযোগে কাজ করছি যাতে করে এবারের ঈদযাত্রাটা ভালো হয়, আনন্দের হয় এবং তারা হয়রানির মুখে না পড়েন, তাদের যাতে বেশি ভাড়া দিতে না হয়।
ঈদযাত্রা স্বস্তির হচ্ছে কি না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, একদম শতভাগ তো বলা যাবে না, তবে আমরা বলব যাত্রীদের কাছ থেকে খুব একটা বড় ধরনের অভিযোগ পায়নি।
যাত্রীদের চাপ বেশি হওয়ার কারণে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর সম্ভাবনা আছে কি না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, ট্রেন তো আসলে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন যে আমাদের লোকবলের সংকট আছে, আমাদের কোচের সংকট সত্ত্বেও আমরা ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়েছি, ৪০টা অতিরিক্ত কোচ দেওয়া হয়েছে। আর পাঁচটা স্পেশাল ট্রেন চালু করা হয়েছে ঈদ উপলক্ষে। এটাই আমাদের সীমিত সামর্থ্য এবং আমরা আশা করছি, আরও নতুন কোচ আসবে এলে আমরা ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে পারবো।
ট্রেনের ছাদে যাত্রী উঠা প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা ছাদে ওঠা নিরুৎসাহিত করি। ধরেন একটা লোক ছাদে ওঠলেন, নির্দেশ দেওয়া আছে ছাদে কোনো লোক ওঠবে না কিন্তু এখানে একটা মানবিক দিকও আছে। আপনি যদি নির্যাতন করেন, তাকে জোর করে নামান, তাহলে আপনারাই আবার বলবেন যে, জোর করা হয়েছে। আমরা আবারও নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছি যে, ছাদে যাত্রী ওঠবে না এবং জানালা দিয়ে লোক ঢুকবে না।
সামান্য ভাড়া বাড়ানোর বৈধতা ব্যবস্থা করা হচ্ছে কি না, এক প্রশ্নের উত্তরের উপদেষ্টা বলেন, না, কোন বৈধতা দেওয়া হয়নি। সবক্ষেত্রেই টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেখানে ক্রস অভিযোগ আছে সেখানে মোবাইল কোটের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সকাল আটটা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত মোবাইল কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেটরা আছেন, আবার যদি এমন হয় আবারও জরিমানা করবেন। অতিরিক্ত ভাড়া কিন্তু ফেরত দেওয়া হয়েছে সবক্ষেত্রেই।
এসকে/এএটি
