ঢাকা, রবিবার, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৫ মে ২০২৫, ২৭ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

দ. আফ্রিকার সঙ্গে প্রধান বিচারপতি-আইন উপদেষ্টার অভিজ্ঞতা বিনিময়

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৫৩, মে ২৪, ২০২৫
দ. আফ্রিকার সঙ্গে প্রধান বিচারপতি-আইন উপদেষ্টার অভিজ্ঞতা বিনিময়

ঢাকা: বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে দুইটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ১৭-২৪ মে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেন, যার মূল লক্ষ্য ছিল ন্যায়বিচার, সম্প্রীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও নিরাময় প্রক্রিয়ার ওপর অভিজ্ঞতা বিনিময়।  

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও কমনওয়েলথ সচিবালয়ের যৌথ সহায়তায় আয়োজিত এ কর্মসূচিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদ-পরবর্তী সময়ে সত্য অনুসন্ধান, বিচার কার্যক্রম এবং স্মৃতির সংরক্ষণ সম্পর্কিত বাস্তব অভিজ্ঞতা ও কার্যকর পন্থাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়।

 

শনিবার ( ২৪ মে) ঢাকার ইউএনডিপি অফিস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

এতে উল্লেখ করা হয়, এ আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তাদের মতবিনিময় হয় ভুক্তভোগী, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সমাজ, ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের সাবেক কমিশনার এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সঙ্গে।  

এতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের এ সময়ে সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি এবং গণতান্ত্রিক সংস্কার প্রক্রিয়া জোরদারকরণের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, আমাদের বিচারিক সংস্কার রোডম্যাপ বা পরিকল্পনা রূপরেখা অন্যান্য সব সংস্কারের ভিত্তিমূল। এরই মধ্যেই বিচারব্যবস্থার রূপান্তর শুরু হয়েছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপ ও রূপান্তর চলাকালীন ন্যায়বিচার পদ্ধতি কীভাবে জাতীয় ঐক্য ও গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে পারে তা নিয়ে আজকের এ গভীর আলোচনা ও চিন্তাভাবনা আমাদের সংস্কার পরিকল্পনা গঠনে আরও সহায়ক হবে।

দক্ষিণ আফ্রিকার সাংবিধানিক আদালতে এক বৈঠকে দেশটির প্রধান বিচারপতি মান্ডিসা মুরিয়েল লিন্ডেলওয়া মায়া বাংলাদেশের মানবাধিকার রক্ষা এবং আইনের শাসন শক্তিশালী করার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। আর মানবাধিকার কমিশনে অনুষ্ঠিত আলোচনায় জোর দেওয়া হয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং অতীতের অন্যায় অবিচার পুনরাবৃত্তি রোধে নিরাময় প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে।

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের সদস্য, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে আমাদের সংলাপ আবারও এক গভীর উপলব্ধি এনে দিয়েছে—সত্য উদঘাটনই হলো জবাবদিহিতা, ন্যায়বিচার ও জাতীয় নিরাময়ের প্রাথমিক ভিত্তি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের পাশাপাশি বাংলাদেশেও এমন একটি প্রক্রিয়া দরকার, যা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে এবং সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।

ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, বিশ্বব্যাপী কাজের অভিজ্ঞতা ও নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইউএনডিপি দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়ে পারস্পরিক জ্ঞান বিনিময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে; যা বাংলাদেশে ন্যায়বিচার ও শাসনব্যবস্থার সংস্কারকে এগিয়ে নিতে অত্যন্ত সহায়ক। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শেখা, সহকর্মীদের সঙ্গে চিন্তাভাবনার আদান-প্রদান, এবং ভুক্তভোগীদের কষ্টের কথা শোনা- সব মিলিয়ে এটা অত্যন্ত সমৃদ্ধ এক অভিজ্ঞতা।

প্রিটোরিয়া ও কেপটাউনে আরও মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ কর্মসূচি। এ উদ্যোগটি ছিল বাংলাদেশের বিচার বিভাগের উন্নয়নে ইউএনডিপির বৃহত্তর সহায়তার অংশ-যা ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থার পক্ষে কাজ করে।

টিআর/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ