ঢাকা, রবিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২, ১১ মে ২০২৫, ১৩ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে রাজশাহী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:১১, মে ১০, ২০২৫
মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে রাজশাহী

রাজশাহী: শেষ বৈশাখে প্রকৃতি যেন রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। রাজশাহীতে আজ সকাল থেকেই আগুন ঝরাচ্ছে সূর্য।

ঠাঁ ঠাঁ রোদে পুড়ছে পদ্মাপাড়ের এ সবুজ শহর। ঘন পত্র-পল্লবে ঢাকা গাছপালাও যেন তপ্ত নিঃশ্বাস  ছাড়ছে। গরমের তীব্রতায় মানুশের পাশাপাশি পশু-পাখিরাও আজ হাঁসফাঁস করছে।

ঘরে-বাইরে কোথাও এতটুকু স্বস্তি নেই। অব্যাহত তাপপ্রবাহে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। একটু বৃষ্টি ও শীতল হাওয়ার পরশ পেতে সাধারণ মানুষ যেন ব্যকুল হয়ে উঠেছেন৷ কিন্তু বিধি বাম বৃষ্টির দেখা নেই!

কদিন থেকে রাজশাহীর সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছিল। কিন্তু শনিবার (১০ মে) রাজশাহীর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়েছে। আজ বেলা ৩টায় রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ এটিই এখন পর্যন্ত চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে শুক্রবার রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে তীব্র খরায় কাটছে ঝড়-ঝঞ্ঝার বৈশাখ। তাপদাহ যেন শেষই হচ্ছে না।

ফলে বৃষ্টির জন্য চারিদিকে হাহাকার পড়ে গেছে। টানা তাপদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। অসহনীয় রোদ আর গরমে স্থবিরতা নেমে এসেছে কর্মজীবনেও। বাসা, অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবখানেই যেন গরম আর গরম। দিনের বেলায় দূরে থাক রাতেও গাছের পাতাও নড়ছে না। এর সাথে যুক্ত হয়েছে ভয়াবহ লোডশেডিং। তাই নাকাল হয়ে পড়েছে রাজশাহীর জনজীবন।

অফিস-আদালত ও বাসা-বাড়ির আসবাবপত্র থেকে শুরু করে সব জিনিসপত্রই তেঁতে উঠছে। ভবনের ট্যাপ দিয়ে বের হচ্ছে ফুটন্ত পানি। বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকায় মাথার ওপরে ফ্যানটাও দিচ্ছে গরম বাতাস। ঘড়ি-ঘণ্টায় সময়ের হেরফের হলেও- রাজশাহীর আবহাওয়ার কোনো হেরফের হচ্ছে না।  

তীব্র তাপদাহের কারণে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়াসহ নানা রোগবালাইয়ে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা। বিশেষ করে হাসপাতালের তিনটি শিশু ওয়ার্ডে যেন ধাপ ফেলার যায়গা নেই। বেডে ফ্লোরে সবখানেই গরমজনিত কারণে রোগী আর রোগী। এর পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের দুর্ভোগ বেড়েছে এ তীব্র গরমে। তাই এ তীব্র তাপপ্রবাহের সময় বয়বৃদ্ধ ও শিশুদের রোদে না বের হয়ে ঠাণ্ডা পরিবেশের মধ্যে থাকার জন্য বলছেন চিকিৎকরা।  

জানতে চাইলে রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) রহিদুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিন ধরে রাজশাহীর তাপমাত্রার পারদ কেবল ওপরেই উঠছে। বৃষ্টি না হলে এই তাপমাত্রা প্রশমিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

আবহাওয়া কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম জানান, শনিবার (১০ মে) বেলা ৩টায় রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গতকাল শুক্রবার (৯ মে ) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর আজ বেলা ৩টায় রাজশাহীতে বাতাসের আদ্রতা ছিল ৪০ শতাংশ এবং ভোর ৬টায় ৪টায় রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সাধারণত তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে থেকে ৩৮ ডিগ্রি হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ বলে ধরা হয়। এছাড়া দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠলে তাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। ফলে রাজশাহীর ওপর দিয়ে এখন তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

এসএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।