ঢাকা: ভারতব্যাপী মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে প্রতিবাদী সংগীতযাত্রা ‘সং মার্চ’ শুরু করেছে জাতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেল তিনটায় পল্টনের মুক্তাঙ্গন থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়।
মুক্তাঙ্গন থেকে পিকআপভ্যানে করে ইসলামী সংগীত পরিবেশন করতে করতে সংগীত যাত্রা শুরু করেন জাতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সদস্যরা। এই ‘সং মার্চ’ থেকে ভারতব্যাপী মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে ভারতীয় দূতাবাসে প্রতিবাদলিপি দেবেন তারা।
‘সং মার্চ’ পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জাতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি কবি মুহিব খান বলেন, ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর থেকে সারা ভারতজুড়ে নানা সময়ে নানা স্থানে নানাভাবে সেখানকার মুসলমানদের ওপর হত্যা, গুম, ধর্ষণ, ধ্বংসযজ্ঞ, উচ্ছেদ ও লাঞ্ছনাসহ নানারকম নির্যাতন সংঘটিত হয়ে আসছে। বিশেষ করে ১৯৯২ সালে অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা থেকে নিয়ে ২০০২ সালে গুজরাটের নৃশংস মুসলিম হত্যা ও ধর্ষণযজ্ঞ, ২০১৩ সালে মুজাফফরাবাদের মুসলিম হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ, ২০২০ সালে দিল্লিজুড়ে মুসলিম হত্যা ও মসজিদসহ বিভিন্ন মুসলিম ঐতিহাসিক স্থাপত্যকলা ধ্বংসযজ্ঞ, সর্বশেষ ভারতীয় মুসলিম জনগোষ্ঠীর সম্পদ হরণ ও প্রতিকার হননের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে ভারতের পার্লামেন্টে গৃহীত ওয়াকফ আইন সংশোধন বিলকে কেন্দ্র করে ভারতীয় মুসলমানদের ওপর যে নিধন ও নির্যাতন চলছে আমরা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর অঙ্গ ও অংশ হিসেবে এবং আধুনিক বিশ্বের মানবতাবাদী সভ্য মানুষ হিসেবে এসবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নিন্দা ও প্রতিবাদের ভাষা দেশ ও বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে জাতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আমরা আজ ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে প্রতিবাদী সংগীতযাত্রা ‘সং মার্চ’ করছি।
কবি মুহিব খান আরও বলেন, আমরা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভারতের ধর্মান্ধ উগ্রবাদী গোষ্ঠীর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং কখনো কখনো এসব কর্মকাণ্ডে ভারত সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতার বিরুদ্ধে শ্লোগান, সংগীত এবং সুস্পষ্ট বক্তব্যের মাধ্যমে দেশ ও বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চাই যে, ভারতসহ পৃথিবীর যেকোনো ভূখণ্ডে নির্যাতিত মুসলমানদের পাশে আমরা আছি। শুধু মুসলিমরাই নন, নির্যাতন অন্যায় ও অমানবিকতার শিকার যেকোনো মানুষের পক্ষেই আমাদের অবস্থান।
তিনি বলেন, আমরা ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনারের মাধ্যমে ভারতীয় মুসলিমদের নাগরিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার এবং নিজ ধর্মীয় অনুশাসন পালনের পূর্ণাঙ্গ অধিকার নিশ্চিত করতে এবং ভারতীয় মুসলমানদের সামগ্রিক নিরাপত্তা ও মর্যাদা সুরক্ষায় সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিতে ভারত সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি।
কবি মুহিব খান বলেন, আমরা উগ্রতা ও সহিংসতায় বিশ্বাসী নই। আমরা চাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। আমরা চাই ধর্মান্ধ উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের পতন। আমরা চাই পৃথিবীর সব দেশের সব মানুষ নিজেদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকুক। আমরা চাই বিশ্ব মানবতা এবং প্রতিটি মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতার বিজয় হোক।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৫
এসসি/এমজেএফ