ঢাকা: তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্প নিয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, তিস্তা বিষয়ে আমাদের একটি নীতিগত অবস্থান রয়েছে।
রোববার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই নদীতে যে পানি আসে, তা ভারতের সহযোগিতা ছাড়া কতটুকু পাওয়া যাবে, এবং সেই পানির সর্বোচ্চ ব্যবহার কীভাবে নিশ্চিত করা যায়—এটা এখনো বিস্তারিতভাবে পরিকল্পিত হয়নি। জলাধার নির্মাণ করে পানির সংরক্ষণ সম্ভব কিনা, সে বিষয়েও আরও বিশদ পরিকল্পনা প্রয়োজন।
চীনের প্রাথমিক নকশার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে চীন একটি প্রাথমিক ধারণাপত্র দিয়েছিল, তবে সেটি প্রকল্প নয়। আমরা এখনো কেবল নীতিগত আলোচনার পর্যায়ে আছি। প্রকল্প গ্রহণের আগে সম্ভাব্যতা যাচাই জরুরি।
এদিন বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দরে ‘বে টার্মিনাল’ উন্নয়ন প্রকল্পের একটি অংশ অনুমোদন দেওয়া হয়। এটি একটি মেগা প্রকল্প, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৫২৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে ৯ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা এবং বাকি ৪ হাজার ১৯২ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হবে।
উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর প্রকৃতপক্ষে নদীবন্দর। অথচ আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারায় একটি পূর্ণাঙ্গ সমুদ্রবন্দরের প্রয়োজন রয়েছে। সে লক্ষ্যেই বে টার্মিনাল উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আজ একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে এবং আরও একটি প্রকল্প নেওয়া হবে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায়। সব মিলিয়ে এখানে চারটি টার্মিনাল গড়ে তোলা হবে। প্রকল্পটি যাতে দ্রুত শেষ হয় সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে, ভবিষ্যতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে। সে অনুযায়ী একটি বড় সমুদ্রবন্দর কেবল আমাদের জাতীয় চাহিদাই পূরণ করবে না, বরং এটি একটি আঞ্চলিক বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করবে, যা রাজস্ব বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। ”
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ড. মাহমুদ বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় উপকারভোগী নির্বাচন করায় প্রায় ৫০ শতাংশ প্রকৃতভাবে ভাতার উপযুক্ত নয়। দীর্ঘদিন ধরে এ কর্মসূচিতে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে, যার ফলে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা অনেক সময় বঞ্চিত হচ্ছেন।
বিদেশি ঋণভিত্তিক প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগ নিয়ে তিনি বলেন, বড় ধরনের বিদেশি ঋণ নিতে হলে সাধারণত পরামর্শকের শর্ত আরোপ করা হয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহজ শর্তে ঋণ পেতে হলে বিদেশি পরামর্শকের মতামত গ্রহণ করতেই হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৫
এসএমএকে/এমজে