ঢাকা: রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযযাপিত হয়েছে। এতে ইতালির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রবাসী বাংলাদেশি এবং রোমে কর্মরত বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রোমের বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, কাভালিয়েরি হোটেলে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে রাষ্ট্রদূত রকিবুল হক ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে আসা অতিথিদের সাদর অভ্যর্থনা জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও ওশেনিয়া ডিভিশনের প্রধান রাষ্ট্রদূত আলেসসান্দ্রা স্কিয়াভো।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ও ইতালির জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠান উপলক্ষে রোমের মেয়রের পক্ষ থেকে পাঠানো বক্তব্য পাঠ করে শোনানো হয়। মেয়রের বাণীতে রোমের অর্থনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের বিষয় উঠে আসে। তিনি সমাজে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আরও গভীরভাবে একীভূত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যের শুরুতেই মহান স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে আজ বাংলাদেশ স্বাধীন বলেই রোমের মতো ঐতিহ্যবাহী রাজধানীতে নিজের পতাকা উত্তোলন করা, জাতীয় সংগীত বাজানো ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা সম্ভব হয়েছে। তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন ইতিবাচক ও সক্ষমতার বিষয় উল্লেখ করেন। তিনি ২০২৪ এর জুলাই-আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি সুখী, সমৃদ্ধ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার যে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে তা যার যার জায়গা থেকে বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে আরও বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশ-ইতালি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়াতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের পরিশ্রম ও নিষ্ঠা ইতালিতে বাংলাদেশের মর্যাদা আরও সুসংহত করছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রবাসীদের অপরিসীম অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করে দূতাবাসের বিভিন্ন উদ্যোগে তাদের সাহায্য কামনা করেন।
বিশেষ অতিথি রাষ্ট্রদূত আলেসসান্দ্রা স্কিয়াভো তার বক্তব্যে বাংলাদেশ-ইতালি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। তার বক্তব্যে বর্তমান সরকারের সঙ্গে ইতালি সরকারের সুসম্পর্ক, সাম্প্রতিক উচ্চ পর্যায়ের সফরসমূহের কথা উঠে আসে। বাণিজ্য, শিক্ষা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-ইতালির সহযোগিতা, শ্রম বাজারের চ্যালেঞ্জসমূহ দূর করার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
উল্লেখ্য, দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জা ও বাংলাদেশ কর্নারে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পণ্যসামগ্রীর মাধ্যমে বাংলাদেশের বৈচিত্র্য বিদেশিদের সামনে ফুটিয়ে তোলা হয়। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশি শিশুদের অংশগ্রহণে যন্ত্রসংগীতের সঙ্গে দেশাত্মবোধক গান ও নৃত্য পরিবেশনা। নৈশভোজে উপস্থিত অতিথিদের বাংলাদেশি ও ইতালিয়ান খাবার পরিবেশন করা হয়।
দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়। তবে তখন পবিত্র রমজান মাস থাকায় দূতাবাস এই রিসেপশনটি পরে আয়োজন করে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৫
টিআর/আরবি