ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ ভাদ্র ১৪৩২, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ২৪ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

পুলিশি তদন্তে নতুন মোড়

নারীকে হত্যার পর মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রাখেন ভাড়াটিয়া, ছেলে সাদ নির্দোষ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:৩৪, নভেম্বর ১৫, ২০২৪
নারীকে হত্যার পর মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রাখেন ভাড়াটিয়া, ছেলে সাদ নির্দোষ 

বগুড়া: বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় উম্মে সালমা (৫০) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখার ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের দু-দিন পর উম্মে সালমার ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান (১৯) এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে দাবি করেছিল র‍্যাব।

 

তবে পুলিশ বলছে, সালমার ছেলে সাদ নয়, হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তাদের ভাড়াটিয়া। অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

আটক তিনজন হলেন- নিহত উম্মে সালমার বাড়ির ভাড়াটিয়া মাবিয়া আক্তার এবং তার দুই সহযোগী সুমন চন্দ্র ও মোসলেম।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার।

এর আগে, রোববার (১০ নভেম্বর) দুপচাঁচিয়া উপজেলার জয়পুরপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে খুন হন উম্মে সালমা। খুনিরা তার মরদেহ ফ্রিজে রেখে যান। এর ঠিক দুই দিন পর মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উম্মে সালমার ছোট ছেলেকে সাদকে আটক করে র‍্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্প সদস্যরা।  

পরে র‍্যাব জানায় উম্মে সালমার ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান স্বীকার করেছেন তিনি নিজেই তার মাকে হত্যা করেছেন।  

আর এখন জেলা পুলিশ বলছে, সাদ তার মাকে হত্যা করেননি, তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া মাবিয়া আক্তার ২ সহযোগীকে নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।  

দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের সময় ওই বাসা থেকে খোয়া যাওয়া ওয়াইফাই রাউটার এবং মোবাইলের সূত্র ধরে তারা প্রথমে আটক করেন বাসার ভাড়াটিয়া মাবিয়া আক্তারকে।  

জিজ্ঞাসাবাদ মাবিয়া পুলিশকে জানান, চার মাস আগে উম্মে সালমার ওই বাসা ভাড়া নিয়ে তিনি এখানে মাদক ও অনৈতিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি টের পাওয়ার পর উম্মে সালমা ও তার স্বামী আজিজুর রহমান ভাড়াটিয়া মাবিয়া আক্তারকে এক মাস ধরে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলছিলেন। তার কাছে দুই মাসের ভাড়াও পাওনা ছিল।  

এদিকে এসব বিষয় নিয়ে মাবিয়া বাড়ির গৃহকর্ত্রী উম্মে সালমার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাই তিনি তার সহযোগী ও মাদক ব্যবসায়ী সুমন চন্দ্র সরকার এবং মোসলেমকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডের আগের দিন উম্মে সালমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।  

পরিকল্পনামাফিক ঘটনার সময় মাবিয়া প্রথমে ওই বাসায় প্রবেশ করেন। পরে মোবাইল ফোনে ডেকে নেন দুই সহযোগী সুমন ও মুসলিমকে। তারা দুইজন বাসায় ঢুকেই চেতনানাশক স্প্রে করে প্রথমে উম্মে সালমাকে অচেতন করে ও হত্যা করে। এরপর তার নাক মুখ ও হাত বেঁধে বাসার ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখে তারা তিনজন সেখান থেকে বেরিয়ে যান।

বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার জানান, আটকের পর মাবিয়া, সুমন ও মোসলেম উম্মে সালমাকে হত্যার কথা স্বীকার করে ঘটনার পুরো বিবরণ দিয়েছেন। পরে তাদের দেখানো জায়গা থেকে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং ওই বাসা থেকে খোয়া যাওয়া জিনিসপত্রগুলো উদ্ধার করে।

তিনি আরও বলেন, বিকেলে তাদের তিনজনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আদালতে নেন পুলিশ। আমরা এ ঘটনায় আরও অধিকতর তদন্ত করছি। বিস্তারিত তথ্য তদন্ত শেষে জানানো হবে।

আগের নিউজ লিংক>> মাকে হত্যা করে ফ্রিজে রেখে ডাকাতির নাটক সাজালেন ছেলে

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৪
কেইউএ/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।