বাংলাদেশের মতো ক্রান্তীয় আবহাওয়ায় সূর্যের তাপ ও অতিবেগুনি রশ্মি (ইউভি-এ ও ইউভি-বি) শুধু অস্বস্তিই বাড়ায় না, বরং ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকলে সানবার্ন, ঘামাচি, চুলকানি, কালো দাগ, অকাল ভাঁজ—এমনকি ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ে।
সানস্ক্রিন কেন দরকার?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাদের নানা প্রয়োজনে রোদে কাজ করতে হয় বা নিয়মিত রোদে বের হতে হয়, তারা সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলে অকালেই বয়সের ছাপ পড়তে পারে। ত্বকে মেলাসমা বা কালো ছোপ দেখা দিতে পারে। ত্বকের স্থায়ী ক্ষতি ও ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
কতটুকু ব্যবহার করবেন?
মুখ, ঘাড় ও কাঁধে অন্তত ১ চা-চামচ পরিমাণ সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। বাইরে বের হওয়ার অন্তত ১৫ মিনিট আগে এটি লাগানো উচিত। টানা রোদে থাকা বা ঘাম হলে প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর আবার লাগানো জরুরি।
আমাদের দেশের গরমে সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে অনেকের ত্বকে ঘাম বেড়ে যায়। সমাধান হতে পারে ম্যাটিফাইং সানস্ক্রিন, জেল বা স্প্রে ব্যবহার করা। ভারী ক্রিম এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে সানস্ক্রিনে সামান্য পানি মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
কোন ধরনের সানস্ক্রিন?
ফিজিক্যাল (মিনারেল): জিঙ্ক অক্সাইড বা টাইটানিয়াম অক্সাইডযুক্ত। রশ্মি প্রতিফলিত করে। সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযোগী।
কেমিক্যাল: অক্সিবেনজোনসহ নানা উপাদানযুক্ত। রশ্মিকে তাপে রূপান্তর করে। ব্যবহার করার অন্তত ১৫ মিনিট পর এটি কার্যকর হয়।
সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর (SPF) নিয়ে ভুল ধারণা
অনেকে মনে করেন, বেশি SPF মানেই ট্যান (ত্বক কালো হয়ে যাওয়া) রোধ করা যায়। আসলে ট্যান রোধের সঙ্গে SPF-এর সরাসরি সম্পর্ক নেই। বরং SPF নির্দেশ করে, ত্বককে কতক্ষণ সুরক্ষা দেওয়া যাবে।
SPF ৩০ = প্রায় ৯৭ শতাংশ সুরক্ষা
SPF ৫০ = প্রায় ৯৯ শতাংশ সুরক্ষা
শুধু SPF নয়, “ব্রড স্পেকট্রাম” লেখা আছে কি না সেটাও দেখে নিতে হবে। কারণ এটি ইউভি-এ ও ইউভি-বি—দুই রকম রশ্মি থেকেই সুরক্ষা দেয়।
বাংলাদেশের আবহাওয়ায় অতিরিক্ত সতর্কতা
আমাদের দেশে গাঢ় ত্বকে UV রশ্মির প্রভাব তুলনামূলক কম হলেও মেলাসমা বা কালো দাগের ঝুঁকি বেশি। উচ্চ আর্দ্রতায় ফাঙ্গাল ইনফেকশন ও লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। রোদের প্রভাব জমে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদে ত্বকের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।
ত্বকের সুরক্ষায় প্রতিদিন সানস্ক্রিন ব্যবহার অপরিহার্য। সঠিক নিয়ম মেনে সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে রোদ, ঘাম ও দূষণের মাঝেও ত্বক থাকবে সুস্থ ও সতেজ।