এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিনটি একজন শিক্ষার্থীর জীবনে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি তার পরিবার, বিশেষ করে অভিভাবকদের জন্যও তা একটি আবেগময় সময়। এই দিনে সন্তানের মানসিক অবস্থা অত্যন্ত সংবেদনশীল থাকে।
ফল ভালো হোক বা প্রত্যাশার চেয়ে কম—অভিভাবকদের ভূমিকাই হতে পারে শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের পথ চলায় সাহসের উৎস।
ফল জানার আগেই অভিভাবকদের উচিত নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখা। সন্তানের ফল কেমন হবে, তা নিয়ে অতিরিক্ত উত্তেজনা বা উদ্বেগ যেন সন্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি না করে। অভিভাবকের শান্ত আচরণ সন্তানের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়ক হয়।
ফল প্রকাশের সময় সন্তানকে একা না রেখে তার পাশে থাকা গুরুত্বপূর্ণ। সেটা মানসিকভাবে সাহস যোগায়। ভালো ফল হলে তা উদযাপন করুন, আর প্রত্যাশার চেয়ে কম ফল হলেও তাকে সান্ত্বনা দিন, বোঝান যে এটা জীবনের শেষ কিছু নয়।
অনেক সময় দেখা যায়, অভিভাবকরা সন্তানের ফল অন্য কাউকে বা অন্য ভাইবোনদের সঙ্গে তুলনা করেন। এটা শিশুর আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে দিতে পারে। বরং সন্তানের পরিশ্রম, চেষ্টা এবং অর্জনের প্রশংসা করুন। ত্রুটি থাকলে তা নিয়ে ধৈর্য ধরে কথা বলুন।
ফল প্রকাশের পরই সন্তানের জন্য উপযুক্ত কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেছে নেওয়া শুরু হয়। এসময় তাকে সহযোগিতা করুন, তার আগ্রহ ও যোগ্যতাকে গুরুত্ব দিন। শুধু নম্বরের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত না নিয়ে, সন্তানের পছন্দ ও স্বপ্নকে মূল্য দিন।
ফল খারাপ হলে অনেক অভিভাবক রেগে যান বা অপমানজনক কথা বলেন, যা শিশুর ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে সন্তানের পাশে থেকে তাকে বোঝান—ভুল থেকে শেখা যায়, সামনে আরও সুযোগ আছে।
পরিবার, আত্মীয়স্বজন বা প্রতিবেশীদের কাছে সন্তানের ফলাফল প্রকাশ করার ক্ষেত্রে সচেতন থাকুন। অনেক সময় সামাজিক চাপের কারণে সন্তান হীনমন্যতায় ভোগে। কারো নেতিবাচক মন্তব্যে কান না দিয়ে সন্তানের আত্মসম্মান রক্ষা করুন।
ফল ভালো হলে সন্তানের সাফল্য উদযাপন করুন। তবে খেয়াল রাখুন, অন্য কেউ যাতে হেয় বোধ না করে। সন্তানের আনন্দের পাশাপাশি অন্যদের প্রতি সহানুভূতিশীল হোন।
ফলাফল জীবনের একটি ধাপ মাত্র, চূড়ান্ত পরিণতি নয়। একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করে তার আগ্রহ, পরিশ্রম, এবং আত্মবিশ্বাসের ওপর। এসএসসির ফল যাই হোক, অভিভাবকদের উচিত সন্তানের পাশে দাঁড়ানো, তাকে দিক-নির্দেশনা দেওয়া এবং সব পরিস্থিতিতে ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখা।
এনডি