সুস্থ থাকতে ঘুমের বিকল্প কিছু নেই। রাতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা আমরা বিছানায় থাকি।
আমাদের অনেকেরই ঘুমানোর একটি প্রিয় ভঙ্গি থাকে, কিন্তু আমরা খুব কমই জানি—এই ভঙ্গি আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর কতটা প্রভাব ফেলতে পারে।
শোয়ার ভঙ্গি সঠিক না হলে তা শুধু পিঠে বা ঘাড়ে ব্যথা নয় বরং হৃদরোগ, ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝেইমার মতো জটিল রোগের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে।
ঘুম বিশেষজ্ঞ ড. ক্যাট লেডারলে বলেন, দিনের বেলায় আমরা যেভাবে চলাফেরা করি, তার প্রভাব পড়ে রাতের ঘুমের সময় শোয়ার ভঙ্গিতে।
যেমন যারা দীর্ঘ সময় বসে থেকে কাজ করেন, তাদের ঘুমের সময় শরীরে অস্বস্তি হতে পারে।
তিনি বলেন, পাশ ফিরে ঘুমানো সবচেয়ে প্রচলিত ভঙ্গি হলেও, ডান বা বাম পাশে ঘুমানোর আলাদা স্বাস্থ্য উপকারিতা ও ঝুঁকি রয়েছে। গর্ভবতী নারীদের বাম পাশে ঘুমানো উপকারী। অন্যদিকে, হৃদরোগীদের জন্য ডান পাশে ঘুমানো ভালো, কারণ এতে হার্টের ওপর চাপ কমে।
পিঠের ওপর চিৎ হয়ে ঘুমানো ঘাড় ও মেরুদণ্ডের জন্য ভালো হলেও এটি ঘুমের মাঝে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। উপুর হয়ে ঘুমানো সবচেয়ে ক্ষতিকর, কারণ এতে ঘাড় ও পিঠের চাপ বেড়ে যায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়াও স্মার্টফোন-ট্যাব বা এ জাতীয় হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইসেই আমাদের অধিকাংশ সময় ব্যয় হচ্ছে। শোয়ার সময় এসব ব্যবহারে চাপ পড়ছে মেরুদণ্ডে, পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পিঠ-ঘাড়-চোখ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিভাইস থেকে দূরে যাওয়ার পর আমাদের মস্তিষ্ক স্থির হয়ে ঘুমের জন্য প্রস্তুত হতে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লেগে যায়। এজন্য ঘুমানোর সময়ের অন্তত এক ঘণ্টা আগেই হাতের ডিভাইসটি দূরে রাখুন।
ঘুমের ভঙ্গি বদলাতে চাইলে ধীরে ধীরে অভ্যাস গড়ে তুলুন। প্রথমে কয়েক মিনিট করে শুরু করে প্রতিদিন সময় বাড়ান।
যাদের ঘরে এয়ার কন্ডিশনার চলে, খেয়াল রাখবেন যেন তাপমাত্রা খুব কমানো না হয়।
এছাড়াও সুস্থ থাকতে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া ও ওঠার অভ্যাস করুন।
মনে রাখতে হবে, ঘুম শুধুই বিশ্রাম নয়, এটি আপনার ভবিষ্যৎ সুস্বাস্থ্যের বিনিয়োগ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৫
এসআইএস