ঢাকা, শুক্রবার, ৭ আষাঢ় ১৪৩২, ২০ জুন ২০২৫, ২৩ জিলহজ ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আদালত থেকে দৌড়ে পালালো হত্যা মামলার আসামি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৪৮, জুন ১৯, ২০২৫
আদালত থেকে দৌড়ে পালালো হত্যা মামলার আসামি

ঢাকা: শুনানি শেষে আদালত থেকে পালিয়েছে মো. শরিফুল ইসলাম নামে এক হত্যা মামলার আসামি।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

শুনানি শেষে এজলাস থেকে হাজতখানা নেওয়ার সময় কৌশলে হাতকড়া খুলে পালিয়ে যায় শরিফুল ইসলাম। তিনি জিসান হোসেন (১৪) নামে এক শিশু হত্যা মামলার আসামি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মাইন উদ্দিন বলেন, আসামি হাতকড়া পরা অবস্থায় ছিল। ধাতব কিছু দিয়ে হাতকড়া ঢিলা করে কৌশলে খুলে ফেলে। এর পর দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবল শহিদুলের হাতে আঘাত করে পালিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য কোতোয়ালি থানাকে জানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নতুন করে মামলার প্রস্তুতি চলমান।

পালিয়ে যাওয়া আসামি মো. শরিফুল ইসলাম দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানার হরিপুর গ্রামের মৃত শফিক আহম্মদের ছেলে। তিনি রাজধানীর খিলগাঁও থানার জিসান হোসেন (১৪) হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।

আদালতের সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা যায়, মহানগর দায়রা জজ আদালতের দ্বিতীয় তলার এজলাস থেকে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য চার আসামিকে সঙ্গে নিয়ে হাজতখানার দিকে যাচ্ছিলেন। শরিফুল ছিল সবার সামনে। ভবনের নিচে সিঁড়ির কাছে পৌঁছালে শরিফুল কোনোভাবে হাতকড়া খুলে দৌড় দেয়। পরে পাশের একটি এজলাসে গিয়ে গায়ের সাদা শার্ট খুলে একটি লাল টি-শার্ট পরে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৯ জানুয়ারি দুপুরে খিলগাঁও থানাধীন সিপাহীবাগে এক আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে যায় জিসান হোসেন। সেখান থেকে আর বাসায় ফেরেনি সে।

পরদিন ভোর ৪টার দিকে জিসানের মোবাইল থেকে তার বাবা মোফাজ্জল হোসেন একটি খুদেবার্তা পান।  যেখানে বলা হয়, তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। ৩০ মিনিট পর ফোন করে ১৫ লাখ টাকা চাওয়া হয় তার মুক্তির জন্য।

এ ঘটনায় মোফাজ্জল হোসেন খিলগাঁও থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর ওই বছর ২৩ জানুয়ারি খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছেলের মরদেহ পান তিনি।

পরে র‌্যাব জিসান হত্যায় জড়িত সন্দেহে শাহিন মিয়া ও শরিফুল ইসলামকে আটক করে। র‌্যাবের কাছে তারা স্বীকার করেন, ১৯ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য জিসানকে ফুসলিয়ে সিপাহীবাগ নতুন রাস্তা রিকশা গ্যারেজ থেকে অপহরণ করে আফতাব নগরে আলমগীরের মাছের খামারে নিয়ে যান। সেখানে তারা জিসানকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ গুম করতে কোমরের সঙ্গে মাফলার দিয়ে চারটি ইট বেঁধে পানিতে ফেলে দেন।

এ ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি মোফাজ্জল হোসেন খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি খিলগাঁও থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ রাহাৎ খান দুইজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন করে আসামিদের বিচার শুরু হয়। মামলার ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।

কেআই/এমইউএম/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।