ঢাকা, শনিবার, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১২ জুলাই ২০২৫, ১৬ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

স্বামীর প্রশাসনের নীতি থেকেও দূরে হিলারি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:৩৪, এপ্রিল ১৯, ২০১৬
স্বামীর প্রশাসনের নীতি থেকেও দূরে হিলারি

<< আগের অংশ
ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতরে এসব পুনর্বিণ্যাসের কারণে হিলারিকে তার স্বামীর প্রশাসনের নেওয়া অনেক নীতি-নির্দেশনা থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হচ্ছে। আর পার্টির মূল থেকে যেমন নীতি-পদ্ধতি দেওয়া হচ্ছে সেগুলো রপ্ত করে নিতে হচ্ছে।

অপরাধ বিচার প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে অভিবাসন জোরদার পর্যন্ত সকল বিষয়েই তাকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। অতএব তার চ্যালেঞ্জ বার্নি স্যান্ডার্স থেকে নয়, হিলারিকে এসবের মুখোমুখি হতে হচ্ছে পার্টির নীতি পরিবর্তনের কারণেই।

তাহলে বার্নি স্যান্ডার্স কি কিছুই না? তার আংশিক ব্যাখ্যা হচ্ছে, নিঃসন্দেহে, আর হিলারি নিজেও তা স্বীকার করেন, একই নীতি একই সমর্থকগোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও প্রার্থী হিসেবে তার ক্যারিশমা বারাক ওবামা কিংবা তার স্বামী বিল ক্লিনটনের চেয়ে অনেক কম। আর মনে রাখতে হবে ২০০৮ সালে ওবামার জয়ের পেছনে তারুণ্যের যে অবদান সেই তারুণ্য এখন স্যান্ডার্সের পিছু নিয়েছে। ফলে ব্যক্তি পরিচয় এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রগতিশীল অর্থনৈতিক নীতিকে ছাপিয়ে পরিচয়ের রাজনীতিকে গুরুত্ব দেওয়া ডেমোক্রেটিক পার্টিতে নতুন কিছু নয়। ১৯৮২ সালে ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটি সাতজন অফিসিয়াল ককাস নির্ধারণ করে যাদের মধ্যে নারী, কৃষ্ণাঙ্গ, হিসপ্যানিক, এশিয়ান, সমকামি, উদারপন্থি ও ব্যবসা/পেশাদারের প্রতিনিধিত্ব ছিলো। ৩২ বছর পর হিলারি ক্লিনটনের ডেমোক্রেটিক পার্টির ভিতটিও সেখানেই। ডেমেক্র্যাট পার্টির স্যান্ডার্সপন্থি বিবেচনার পেছনে ওয়াল স্ট্রিট ও সিলিকন ভ্যালির ভূমিকা রয়েছে। এখান থেকেই আসে পার্টির বড় একটা তহবিল। কিন্তু যখন কোনও রক্ষণশীল প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই হয় তখন সবচেয়ে প্রগতিশীলকেই বেছে নেওয়া হয়। আর অর্থবান্ধব ক্লিনটনীয় নীতিই তখন বড় বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হবে। উপরন্তু চূড়ান্ত ভোটের লড়াইয়ে বার্নি স্যান্ডার্সের জয়ী হয়ে আসা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ডেমোক্র্যাটদের পরবর্তী প্রজন্ম হিসেবে যারা সামনে এসেছে তাদের মধ্যে জুলিয়ান ও জোকুইন ক্যাস্ট্রো আর নিউ জার্সির সেনেটর কোরি বুকারের কথা বলা চলে যারা ক্লিনটনের প্রতি, ওবামার প্রতিই বেশি ঝুকে রয়েছেন, বার্নি স্যান্ডার্সকে বরং অনেকটা আউটসাইডারই ভাবা হচ্ছে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- আজকের মিলেনিয়াল প্রজন্মের (১৯৮২ থেকে ১৯৯৪ এর মধ্যে যাদের জন্ম) অনেকের কাছে ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিজমের নামে যে সহানুভূতি আদায়ের প্রক্রিয়ায় বার্নি স্যান্ডার্স রয়েছেন তার ধারাবাহিকতায় ২০৩০ কিংবা ২০৫০ এর দশকে একটি স্যোশাল ডেমোক্রেটিক আমেরিকা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে এমন ধারণা করা হবে বড় ভুল।   অর্ধ শতাব্দী আগে, আমেরিকা যখন অ্যাকুয়ারিয়াস যুগ থেকে রিগ্যান যুগে পা দেয় তখন ষাটের দশকের অনেক হিপ্পি আশির দশকের ইয়াপ্পিতে পাল্টে যায়- এরা এখনো সামাজিক ভাবে উদার, কিন্তু সরকারের নিয়ম মেনে তারা ট্যাক্স, মর্টগেজ ঠিকই দিয়ে যাচ্ছে।

এই সব কারণে, ধরে নেওয়া যায় ডেমোক্র্যাটদের ভবিষ্যত ক্লিনটনীয়- হিলারি ক্লিনটনীয়তে পথ পাবে। যা হবে নব্য উদারবাদীতার চেয়েও কিছুটা বেশি প্রগতিশীল আর বিল ক্লিনটনীয় শেতাঙ্গ কর্মজীবী ভোটারদের জন্য সুবিধার ডালা সাজিয়ে বসার ঝামেলা থেকে মুক্ত।

আর অন্যদিকে রিপাবলিকান ভোটারদের অভিজাত সহনশীলতার ধারা আর  লোকরঞ্জনবাদীতার মধ্যে সংঘাত যখন সমাগত তখন নতুন একটি প্রথাপন্থি ধারা সামনে এনেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। যা দ্যুতি ছড়াচ্ছে।

ইতিহাসের বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বলা যায় রুজভেল্টের ডেমোক্র্যাট আর রকফেলারের রিপাবলিকানরা চিরতরে হারিয়ে গেছে। এখন টিকে থাকে ক্লিনটনের ডেমোক্র্যাট আর ট্রাম্পের রিপাবলিকানরা।

<< শুরু থেকে পড়তে>> ক্লিনটনীয়তে ন্যস্ত ডেমোক্র্যাট, ট্রাম্পীয়তে রিপাবলিকান

বাংলাদেশ সময় ১৪০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৬
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।