ঢাকা, সোমবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২, ৩০ জুন ২০২৫, ০৪ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

অভিমানী ‘কালো’ মেয়ের আত্মহনন!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:০৯, নভেম্বর ১৬, ২০১৪
অভিমানী ‘কালো’ মেয়ের আত্মহনন! ব্রততী দাস

ঢাকা: জন্মই যেন আজন্ম পাপ হয়েছিল ‘কালো’ মেয়েটির। পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে সঙ্গে তার এই ‘কালো’ রঙের জন্য কটূক্তি-বিদ্রুপ হজম করতে হচ্ছিল ঘরের লোকজনেরও।

‘বিয়ে হবে না’ বলে ভগ্নিপতির উস্কানির আগুনে ঘি ঢালতেন ভাই-বোনেরা। খোদ জন্মদাতাই বলতেন, ‘মরিস না কেন? মরে যা তুই’!

শেষ পর্যন্ত সবাইকে ‘রেহাই’ দিতে মরলো ‘কালো’ মেয়েটি। আর ‘আত্মহননে’ নিজেও রেহাই খুঁজলো যাবতীয় লাঞ্ছনা-গঞ্জনার হাত থেকে।

মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জঙ্গিপুর থানার চণ্ডিপুর গ্রামে। আর দৃশ্যত ‘আত্মহনন’ করলেও সামাজিক বর্ণবাদী অবিচারের শিকার হয়ে এই ‘খুন’ হয়েছেন স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ব্রততী দাস।

জানা যায়, গায়ের রঙ কালো হওয়ার কারণে নিয়মিতই লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সইতে হতো ব্রততীকে। ‘কালো’ বলে বিয়ে হচ্ছে না বিধায় পাড়া-প্রতিবেশী এমনকি ঘরের লোকজনও নিয়মিত কটূক্তি-বিদ্রুপ-উপহাস করতো তাকে। খোদ বাবাই রোজ ‘মরে যাওয়ার’ কথা বলতেন।

এসব গঞ্জনা অনেক বেশি অসহনীয় হয়ে পড়ায় এবং মানসিক অবসাদের যন্ত্রণায় আত্মহননের পথ বেছে নেন ব্রততী। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) গায়ে আগুন দিয়ে সামাজিক বর্ণবাদী অবিচারের হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করেন তিনি।

মুমূর্ষ অবস্থায় থাকে উদ্ধার করে স্থানীয় তমলুক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, ব্রততীর শরীর একশ’ শতাংশই পুড়ে গেছে। এ কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য শনিবার (১৫ নভেম্বর) তাকে কলকাতায় পাঠানো হয়। কিন্তু চার দিন যমের সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত রোববার (১৬ নভেম্বর) দুনিয়ার কথিত ‘আলো’কে বিদায় দেয় ‘কালো’ মেয়েটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬,২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।