পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের একটি গ্রামে রুশ বিমান হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১৯ জন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, নিহতরা ছিলেন ‘সাধারণ বেসামরিক মানুষ’ যারা ইয়রোভা গ্রামের একটি কেন্দ্রে পেনশন তুলতে এসেছিলেন। অঞ্চলটির প্রধান ভাদিম ফিলাশকিন জানান, ঘটনাস্থলে জরুরি সেবাকর্মীরা উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং স্থানীয়দের ‘নিরাপদ এলাকায় সরে যেতে’ আহ্বান জানানো হয়েছে।

ইয়রোভা দোনেৎস্কের গুরুত্বপূর্ণ শহর স্লোভিয়ানস্কের উত্তরে অবস্থিত এবং এটি রুশ ফ্রন্টলাইনের মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে। ধীরে ধীরে অগ্রসরমান রুশ বাহিনীর কারণে এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল।

এ হামলায় নিহতের সংখ্যা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোর মধ্যে ইউক্রেনে বেসামরিকদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার একটি হতে পারে। এর আগে গত আগস্টের শেষে কিয়েভে রাতভর বিমান হামলায় ২৩ জন নিহত হয়েছিলেন।

গত সপ্তাহান্তে রাশিয়া এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আকাশ হামলা চালায় কিয়েভে, যেখানে রাজধানীর মূল সরকারি ভবনকে নিশানা বানানো হয়। এ নিয়ে জেলেনস্কি বলেছিলেন, এটি ‘নিষ্ঠুর হামলা’, যার উদ্দেশ্য শুধু যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করা।

মঙ্গলবার সকাল স্থানীয় সময় সাড়ে ১০টার দিকে ইয়রোভায় হামলাটি চালানো হয়। স্থানীয় প্রশাসন প্রধান ওলেক্সান্দর ঝুরাভলিয়ভ জানান, তখন পেনশন বিতরণ চলছিল। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন প্রবীণ মানুষ।

ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহর ক্লিমানকো বলেন, রাশিয়া ওই গ্রামে একটি ‘নিয়ন্ত্রিত বিমান বোমা’ ফেলেছে। ঘটনাস্থলের ছবিতে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউক্রেনের ডাকসেবা ‘উক্রপোশতা’র একটি গাড়ি, যা দিয়ে গ্রামাঞ্চলে পেনশন পৌঁছে দেওয়া হয়। গাড়িটি গাছের আড়ালে রাখা ছিল নিরাপত্তার জন্য। তবে হামলায় স্থানীয় ডাক বিভাগের একজন কর্মকর্তা আহত হন।  

ডাকসেবার প্রধান বলেছেন, হামলার বিষয়টি হয়তো কেউ সমন্বয় (কো-অর্ডিনেট) দিয়ে দিয়েছে।

ইয়রোভা লিমান ও ইজিউম শহরের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ রেলপথের পাশে অবস্থিত। এটি নভোসেলিভকা গ্রাম থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে, যেখানে রুশ সেনারা ইতোমধ্যে উপকণ্ঠে পৌঁছে গেছে। ঝুরাভলিয়ভ বলেন, ‘ফ্রন্টলাইন যেহেতু ১০ কিলোমিটারেরও কম দূরে, তাই আমরা পেনশন বিতরণ সরিয়ে নিয়ে যাব নিরাপদ এলাকায়। ’ ইতোমধ্যে কমপক্ষে ২২ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ইউক্রেনের জরুরি সেবা সংস্থা (ডিএসএনএস) আরও জানিয়েছে, দোনেৎস্কের অন্যান্য বসতিতে রুশ গোলাবর্ষণে আরও তিনজন নিহত হয়েছেন।

জেলেনস্কি বলেন, এ ঘটনার পর বিশ্ব নীরব থাকতে পারে না। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং জি-২০ দেশগুলোর প্রতি সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

এমজে