ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

নেপালে বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৪০, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫
নেপালে বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ১৯

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে জেন-জিদের বিক্ষোভে পুলিশ গুলি চালিয়েছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) এই ঘটনা ঘটে। খবর দ্য কাঠমান্ডু পোস্টের।

এদিন রাজধানীসহ পোখরা, বুটওয়াল, ভৈরবাওয়া, ভারতপুর, ইতাহারি ও দমকসহ বিভিন্ন শহরের তরুণরা দুর্নীতি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন।

কাঠমান্ডুর নিউ বানেশ্বর এলাকা থেকে বিক্ষোভ ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। একপর্যায়ে তরুণ বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। পুলিশ তাদের ঠেকাতে বলপ্রয়োগ করে। পরে স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৩টার পর কারফিউ জারি করে কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হাসপাতালে কমপক্ষে ১৭ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে জাতীয় ট্রমা সেন্টারে আটজন, এভারেস্ট হাসপাতালে তিনজন, সিভিল হাসপাতালে তিনজন, কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজে দুজন এবং ত্রিভুবন টিচিং হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

সুনসারির ইতাহারিতে বিক্ষোভের সময় গুলিতে আহত দুজনও মারা গেলে দেশব্যাপী নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কমপক্ষে ৩৪৭ জন আহত বিক্ষোভকারী চিকিৎসাধীন।  

একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বহু রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন। এভারেস্ট হাসপাতালের অনিল অধিকারী বলেন, চারজনের অবস্থা গুরুতর, আর ট্রমা সেন্টারের ডা. দীপেন্দ্র পাণ্ডে জানান, ১০ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন। তাদের মাথা ও বুকে গুলির ক্ষত আছে।

বানেশ্বরে বিক্ষোভকারীরা ফেডারেল পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে জমায়েত হন। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে পুলিশ। একই ধরনের বিক্ষোভ দেশের বড় শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এক বিবৃতি দিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের উভয় পক্ষকে সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। কমিশন বলেছে, সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইন শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়। তারা ভাঙচুর ও অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে।

এই আন্দোলন প্রধানত জেনারেশন জেড পরিচিত তরুণদের নেতৃত্বে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে। তারা দুর্নীতি ও রাজনৈতিক ব্যর্থতার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন। সকাল থেকেই কাঠমান্ডু এবং অন্যান্য শহরে হাজারো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন, যেখানে শিক্ষার্থী ও যুবসংগঠনের প্রতিনিধিরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন।

কর্তৃপক্ষ কয়েকটি জেলায় কারফিউ জারি করেছে, এবং যেখানে বিক্ষোভ সবচেয়ে তীব্র সেখানে জনসমাগম ও চলাচল সীমিত করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে আহতদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী কাঠমান্ডু ও অন্যান্য শহরের প্রধান প্রধান এলাকায় টহল দিচ্ছে।

আরএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।